Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পত্নীতলায় আমনের বাম্পার ফলন, দাম কম হওয়াই হতাশায় কৃষকেরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:১৭ PM
আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৩৭ AM

bdmorning Image Preview


শষ্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর উত্তরের উপজেলা পত্নীতলায় এবার রোপা আমন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়েছে এবং ফলনও হয়েছে বাম্পার। পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে আমন ধান কাটামাড়াই, বিস্তৃত দিগন্ত জুড়ে ফসলের মাঠে সোনালী রংয়ের আমন ধানের মৌ মৌ গন্ধ, সোনালী ধান ঘরে আসলেও খুশি নয় পত্নীতলার কৃষকেরা। বিশেষ করে বর্গাচাষীরা। 

অনেক আশা আর স্বপ্নে বুক বেঁধেছিল তাধ। তবে যে স্বপ্ন আর আশায় বুক বেঁধেছিল তা আর পূরণ হচ্ছে না বাজারে ধানের দাম কম থাকায়। গত বছর আমন ধান কাটার সময় দাম ছিল ৯০০-১০০০ টাকা মণ আর এবার ৬০০-৭০০ টাকা মণ,

একাধিক কৃষক জানায়, খরচ বাদ দিয়ে কোন লাভই থাকবে না। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৭৫০০-৮৫০০ টাকা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৭০% ধান কাটা শেষ হয়েছে , ৭ দিনের মধ্যেই পুরোদমে ধান কাটা শেষ হবে হবে, উপজেলায় এবার চাষ হয়েছে স্বর্ণা-৫, ব্রি-ধান, কাটারী-৩৪, ব্রি-ধান ৪৯, ব্রি-ধান ৫১, ৫২, ৫৬, ৬২ ও ব্রি-ধান ৭১, চিনি আতব জাতের ধান। উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার (নজিপুর) রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৪৫ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে ২৭৭৮০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে রোপন হয়েছে ৭৬৩৫ হেক্টর।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পত্নীতলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। 

উপজেলার নাদৌড় গ্রামের বর্গাচাষী কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, ১২ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। অর্ধেক  ধান কাটা হয়েছে, ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু দাম কম হওয়াই তিনি হতাশ। জমিওয়ালাকে ধান দেওয়ার পর তার আর কিছুই থাকছেনা।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আশায় আমন ফসল করেছিলাম। এখন লাভ তো দূরের কথা পাওনাদারের টাকা পরিশোধ কিভাবে করবো তাই ভেবে চোখে সরিষার ফুল দেখছি।  

একই গ্রামের কৃষক সামসদ্দীন জানান, ৬.৫০ বিঘা জমিতে জমিতে স্বর্ণা ৫ জাতের ধান চাষ করেছি। ফলনও ভাল হয়েছে বিঘাপ্রতি ২০-২৮ মণ হয়েছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম কম হওয়াই কোন রকমে খরচ উঠতে পারে।

বর্গাচাষী লোকমান জানান, সে ৭ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন ফলন ভাল হলেও ধানের দাম কম হওয়াই জমির মালিককে ধান দেওয়ার পর কিছুই লাভ থাকবে না ।

হাবিবুর, সামসদ্দীন ও লোকমানের মতো হাজারো কৃষকের অভিযোগ তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্টার্জিত ফসলের ন্যায্য মূল্য দেওয়া হোক নয়তো উন্নয়নের বাংলাদেশে কৃষকের ভাগ্যে অবনতি।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে আমনের চাষাবাদ ফলনও বাম্পার হয়েছে। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, গত বন্যায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই কৃষকেরা ঝুকেছে আমন চাষে। সময়মত ও পরিমানমত বৃষ্টিপাত, সার-বীজ-কীটনাশকের প্রাপ্যতা, কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের কর্মতৎপরতা, কৃষি অফিসের উদ্যোগে কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদের উপর প্রশিক্ষণ, সঠিক পরার্মশ প্রদান, মাঠ পরির্দশন অব্যাহত ছিল। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম কম, তবে র্কতন মৌসুমের পরে যদি বাজারে দর ভাল থাকে তাহলে কৃষকেরা লাভবান হবে বলেও জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview