Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিলুপ্তির পথে নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী মহিষের দধি

জামশেদুর রহমান, সেনবাগ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:০৫ PM
আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:০৫ PM

bdmorning Image Preview


নোয়াখালী জেলার ঐতিহ্যবাহী মহিষের দধি প্রায় বিলুপ্তির পথে। এক সময়ে এই অঞ্চলের মানুষের বিয়ে, জম্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মহিষের দধি দিয়ে অপ্যায়ন করাই ছিল অন্যতম। দামে ও ছিল অনেকটা সস্তা, অথচ সময়ের ব্যবধানে ঐতিহ্য হারিয়ে এখন বিলুপ্তির পথে মহিষের দধি।

প্রায় ২ যুগ আগে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও সুর্বণচর, হাতিয়া উপজেলায় বিপুল সংখ্যক মহিষের খামার ছিল। মহিষের খামারগুলো থেকে প্রতিদিন খামারীরা কাঁচা দুধ দিয়ে তৈরি করতো দধি।

মানসম্মত দধি তৈরি করায় দূর দুরান্ত থেকে মানুষ এই জেলায় আসতো মহিষের দধি নেওয়ার জন্য। এখানকার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলা গুলোতে ও এই দধির ব্যাপক প্রচলন ছিল।

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এখানকার মানুষ মহিষের খামার থেকে অনেকটা অনাগ্রহ হারাচ্ছে। যার ফলে এখানকার মহিষের দধির ঐতিহ্য অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে। এক সময়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী, মুসাপুর, রামপুর ও চরএলাহীতে ৬০-৭০টি মহিষের খামার ছিল।

খামারগুলোতে মহিষের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০০০টি। প্রতিদিন গড়ে ১০,০০০হাজার লিটার দুধ খামারগুলো থেকে উৎপাদিত হত। এছাড়া সুবর্ণচর, হাতিয়া উপজেলায় প্রায় কয়েকটি ১৫০-২০০টি মহিষের খামার ছিল।

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মহিষের খামার ব্যবসায়ীরা খামার ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছে। যার ফলে অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে এখানকার মহিষের দধির ঐতিহ্য। বর্তমানে এই জেলায় এখন মহিষের সংখ্যা প্রায় অনেকটাই কমে গেছে।

স্থানীয় মহিষ খামারি মোহাম্মদ টিপু জানান, প্রায় ১যুগ আগে এখানে মানুষ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করার জন্য ব্যাপক মহিষের খামার করতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু খামারীরা সরকারী-বেসরকারী কোনো সংস্থা থেকে সুযোগ সুবিধা না পাওয়ার কারণে তারা ধীরে ধীরে এই মহিষের খামার ব্যবসা ছেড়ে অন্য কোনো আত্মকর্মসংস্থানের দিকে ঝুঁকছে।

স্থানীয় আরেক মহিষ খামারী আরিফ জানান, এক সময়ে এই জায়গা গুলোতে ব্যাপক মহিষের খামার ছিল। এখান থেকে ব্যাপক মহিষের দুধ উৎপাদন করা হত। এখানের মহিষের দুধ দিয়ে দধি তৈরি করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় তা রপ্তানি করা হত। কিন্তু মহিষ খামারীদের প্রাকৃতিক দূর্যোগ, উন্নত চিকিৎসা সহ বিভিন্ন কারণে এখন তেমনটি আগ্রহ প্রকাশ করে না মহিষের খামার দিতে। যদিও স্বল্প সংখ্যক মহিষের খামার রয়েছে।

এ ব্যাপারে নোয়াখালী প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, সরকার পূর্বের তুলনায় এখন অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে খামারিদেরকে। খামারিদেরকে সব সময়ই যেকোনো ধরনের সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হয়। তাদেরকে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বপ্ল ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক লোন এর ও ব্যবস্থ্যা করেছে। বর্তমানে মহিষের খামার বৃদ্ধিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শীঘ্রই মহিষ খামারীরা আবার মহিষ পালনের আগ্রহ বাড়বে।

Bootstrap Image Preview