Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ বুধবার, মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রার্থী প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:২৭ PM
আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:৩৫ PM

bdmorning Image Preview


১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্যে প্রার্থী প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন।

আজ সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, উন্নয়নের আর একটি আরোধ্য সোপান গণতন্ত্রের মজবুত ভিত্তি। সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থিতিশীল ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জনে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে সমান্তরাল পথ ধরে অগ্রসর হতে হবে। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় নির্বাচন একটি নির্ভরশীল বাহন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন তা এগিয়ে নিয়ে যেতে জনগণের কাছে হাজির হয়েছে। জনগণের হয়ে সব রাজনৈতিক দলকে সে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের গণতন্ত্রের ধারা এবং উন্নয়নের গতিকে সচল রাখার আহ্বান জানায়।

দেশের গণতন্ত্রের ধারা এবং উন্নয়নের গতিকে সচল রাখার স্বার্থে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

নির্বাচনী প্রচারণায় সকল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির অনুকূলে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়ে সিইসি বলেন, ‘ভোটার, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, প্রার্থী, প্রার্থীর সমর্থক এবং এজেন্ট যেন বিনা কারণে হয়রানির শিকার না হয় বা মামলা-মোকদ্দমার সম্মুখীন না হন তার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর কঠোর নির্দেশ থাকবে।

আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে উল্লেখ করে তিনি জানান, নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৭ লাখ কর্মকর্তা নিয়োগের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হবে। পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৬ লক্ষাধিক সদস্য মোতায়েন করা হবে। তাদের দক্ষতা নিরপেক্ষতা ও একাগ্রতার উপর বিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হলে দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি তুলে ধরে কে এম নুরুল হুদা বলেন, আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনী সামগ্রী ক্রয় এবং মুদ্রণের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক পারস্পরিক পরামর্শ আদান-প্রদান করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বাচনী দায়িত্বে নিবেদিত রয়েছেন।

২০১৮ সালকে নির্বাচনের বছর উল্লেখ করে সিইসি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে দিয়েছে। সুশীল সমাজ মতামত প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে। গণমাধ্যমে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক বিশেষকদের মতামত, বক্তব্য, প্রবন্ধ প্রতিবেদন, আলোচনা-সমালোচনা ও সুপারিশ প্রকাশ করা হচ্ছে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নির্বাচন নিয়ে প্রতিনিয়ত টক-শো প্রচার করে যাচ্ছে। সব সংবাদ মাধ্যম নির্বাচন নিয়ে বিশেষ খবর ও প্রতিবেদন প্রচার করছে। দেশের প্রখ্যাত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দলগতভাবে অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরামর্শ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপে মিলিত হয়েছেন। সভা-সমাবেশ নির্বাচনী বক্তব্যে উত্তপ্ত হচ্ছে। দেশী-বিদেশী বহুসংখ্যক সংগঠন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশব্যাপী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুকুল আবহ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রার্থী এবং তার সমর্থকগণ নির্বাচনী আইন ও আচরণ বিধি মেনে চলবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, প্রত্যেক ভোটার অবাধে এবং স্বাধীন বিবেকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করবেন। নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটগণ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করবেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভোট কেন্দ্র, ভোটার প্রার্থী, নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং এজেন্টগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। গণমাধ্যম কর্মী বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করবেন। পর্যবেক্ষকগণ নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা মেনে দায়িত্ব পালন করবেন এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সামগ্রিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানের আওতায় রাখবে। এভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে মতানৈক্য বা মতবিরোধ থেকে থাকলে রাজনৈতিকভাবে তা মীমাংসার অনুরোধ জানিয়ে কে এম নুরুল হুদা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় জনগণের মালিকানার অধিকার প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়; নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্র তৈরি হয়। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি।
প্রতিযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন কখনও প্রতিহিংসা বা সহিংসতায় পরিণত না হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতেও তিনি অনুরোধ জানান।

নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, সরাসরি অথবা অনলাইনেও মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধানও রাখা হয়েছে।

পুরাতন পদ্ধতির পাশাপাশি ভোট গ্রহণে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে কে এম নুরুল হুদা বলেন, সরাসরি অথবা অনলাইনেও মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। পুরাতন পদ্ধতির পাশাপাশি ভোট গ্রহণে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ইভিএম ব্যবহার করা গেলে নির্বাচনের গুণগত মান উন্নত হবে এবং সময়, অর্থ ও শ্রমের সাশ্রয় হবে। সে কারণে শহরগুলোর সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা থেকে দ্বৈবচয়ন প্রক্রিয়ায় বেছে নেয়া অল্প কয়েকটিতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে।

 

Bootstrap Image Preview