Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত বিল, চলছে অবৈধ শিকার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৬ PM
আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৬ PM

bdmorning Image Preview


এসএম বাচ্চু, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার তালায় অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে বিল ও তার আশপাশের এলাকাগুলো। এ সুযোগে সৌখিন ও পেশাদার পাখি শিকারিরা বন্দুক, বিষটোপ, জাল ও বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে এসব পাখি নিধন শুরু করছে।

পাখি শিকার করা আইনত নিষিদ্ধ হলেও এ ব্যাপারে প্রশাসন তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ১৯৭৪ সালে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে দণ্ডের বিধান রয়েছে। পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত।

একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এ আইনের কোনো প্রয়োগ হচ্ছে না।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবছরও শীতের শুরুতে সুদূর হিমালয় ও সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান অঞ্চল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ সাতক্ষীরার বিভিন্ন বিলাঞ্চলে ও তার আশে পাশের খালে বিলে আসতে শুরু করে। এ অতিথি পাখির আগমনের কারণেই স্থানীয় শিকারীরা মাঠে নেমে মেতে উঠেছে পাখি নিধনের মহোৎসবে।

শীত মৌসুমে হাজার হাজার পাখির কলকাকলীতে এ অঞ্চলের ছোট ছোট বিল-ঝিলগুলো মুখরিত হয়ে উঠে। পাখির কিচির মিচির শব্দে আনন্দঘন পরিবেশকে করে তোলে আরও প্রাণবান্ধব।

শীতের শুরুতে বালিয়া, খেশরা, জালালপুর, ধুলিহর, খলিশখালী, ধানদিয়া, মানিকহার, সেনেরগাতীসহ নীরব বিলাঞ্চলে থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অসংখ্য অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে। আবার শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে গেলে তারা পূর্বের স্থানে ফিরে যায়। এদের মধ্যে বালি হাঁস, জল পিপি, কোম্বডাক, সরালী কাস্তে চাড়া, পাতাড়ি হাঁস, কাঁদা খোচা, হুরহুর, খয়রা, সোনা রিজিয়া,পরাযায়ী অন্যতম।

উপজেলার পাখিমারা টিআরএম বিলসহ বিভিন্ন বিলে হানা দিয়ে বিষটোপ বা ফাঁদ পেতে নির্বিচারে এসব পাখি শিকার করে বিভিন্ন মাধ্যমে তা বাজারজাত করছে।

নাম প্রকাশে এক শিকারী বলেন, ব্যক্তিগত বা জোটবদ্ধ হয়ে শিকারিচক্র বিভিন্ন উপায়ে মৌসুমে আসা বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি শিকার করে। ছোট ছোট মাছের মধ্যে বিষ মিশিয়ে টোপ, তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মুঠোফোনে বিদেশি অতিথি পাখির ডাকের অডিও রেকর্ড লোড করে গভীর রাতে বিচরণ এলাকায় বসে বাজায়। এতে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা আকৃষ্ট হয়ে নেমে পড়ছে শিকারির পাতা ফাঁদ এলাকায়। ধরাও পড়ছে ব্যাপকভাবে। এরপর শিকারিরা তা স্থানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন বাজার বা চিহ্নিত স্পটে নিয়ে বিক্রি করছে।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, শীতের তীব্রতায় বাংলায় নিরাপদে থাকুক অতিথি পাখিরা,টিকে থাকুক চির চেনা বাংলার প্রাণীবৈচিত্র্য। এভাবে অতিথি পাখি শিকার বন্ধের আইন যথাযথ ভাবে প্রয়োগের জন্য কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

Bootstrap Image Preview