Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ রবিবার, মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কবিগুরুর কবিতার সেই 'খোনকারের জোলা' পুনঃখননের উদ্যোগ

ফারুক হাসান কাহার, শাহজদপপুর ( সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধ:
প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:৩৩ PM
আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:৩৩ PM

bdmorning Image Preview


প্রাচীনকাল থেকে প্রবাহিত করতোয়া ও বড়াল নদীর সঙ্গে সংযুক্ত এবং শাহজাদপুর শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত খোনকারের জোলাটি অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনঃখননের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে অবৈধ দখলমুক্ত করা ও খোনকারের জোলার নির্দিষ্ট স্থান নিরধারনি।

স্থানীয়রা বিশ্বাস করে, 'আমাদের ছোট নদী, চলে বাঁকে বাঁকে; বৈশাখ মাসে তার, হাঁটু জল থাকে'। বিশ্বকবি রবি ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত শাহজাদপুরের কুঠিবাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া এই ছোট নদীকে নিয়েই কবি লিখেছিলেন এই কবিতাটি।

অবৈধ দখল হওয়ার পূর্বে কবিতার সাথে হুবহু মিল ছিল এই খোনকারের জোলাটি। ৮০ দশকে অবৈধ সামরিক সরকার খাল খননের ধুয়া তুললেও রবি ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই খোনকারের জোলাটি সেই সময়ের অধিক মূল্য দেখিয়ে ভরাট করে ভূমি দখলের কু-মতলব নিয়ে।

অবৈধ দখল হওয়ার পূর্বে বর্ষাকালের প্রথম অবস্থা শহরের আসপাশের গ্রাম থেকে নৌকাযোগে গ্রামিণ জনসাধারণ আসতেন ব্যবসামূখর এই শাহজাদপুরে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় ১০ বছর বিভিন্ন সময় কোলকাতা থেকে তার পদ্মাবোটে পদ্মা নদী হয়ে বড়ালের বুক বয়ে করতোয়ায় এসে নামতেন এই খোনকারের জোলার মুখে। সেখান থেকে পান্সি নায়ে আসতেন ঠাকুর জমিদারির কাছারিবাড়ি।

খোনকারের জোলাটি অবৈধ দখল হয়ে যাওয়ায় ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ায় প্রায় ৩০ বছরেও গড়ে উঠেনি শাহজাদপুর পৌরসভার ড্রেনেজ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। যে কারণে শাহজাদপুরের প্রায় ৩০ কিলোমিটার পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেন সব সময় ভরাট ও অচল হয়ে থাকে।

বর্তমান সরকারের নদীনালা, খালবিল, হাওর, বাওর সংরক্ষণ ও পরিবেশ রক্ষার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে সারা দেশে। এরই অংশ হিসেবে খোনকারের জোলা ৩ কি.মি পুনঃখনন ও সংস্কারের জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

শাহজাদপুরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ হাসিব এই প্রতিবেদককে জানান, খোনকারের জোলাটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নির্দিষ্ট স্থান জরিপের মাধ্যমে জানানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করেছে। তার প্রেক্ষিতে আমি খোনকারের জোলার এই ৩ কি.মি সরেজমিন পরিদর্শন করে অবৈধ দখলদারদের কাউকে মৌখিক ও কাউকে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে অবহিত করেছি। স্বেচ্ছায় দখলদাররা দখলমুক্ত না করলে সরকারিভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে অবৈধ দখলমুক্ত করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন থেকে শুরু করতোয়া নদী পর্যন্ত ৩ কি.মি ক্যানেল পুনঃখনন ও ক্যানেলের দুই পাশ দিয়ে চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ হলে শাহজাদপুর শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে। সেই সাথে ক্যানেলটি বহুদিন পরিত্যাক্ত অবস্থায় ময়লা, আবর্জনা ও নানা লতাগুল্মে ভরে থাকায় মশার উৎপত্তিস্থল হয়েছিল। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্তি পাবে শাহজাদপুর শহর। এমনটাই ধারণা স্থানীয়দের।

Bootstrap Image Preview