আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
প্রয়োজনীয় লোকবল, চিকিৎসক সংকট ও যন্ত্রপাতির অভাবসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার। অথচ চিকিৎসক আছেন মাত্র ১৫ জন। নেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর পদ গুলোও শুন্য। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগীদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮ সালে ছোট একটি অস্থায়ী ভবনে এ হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৭৭ সালে বর্তমান ভবনটিতে ৩১ শয্যার সেবা কার্যক্রম চালু হয়। ২০০৭ সালে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। বর্তমানে হাসপাতালের বর্হিবিভাগে দৈনিক সাড়ে ৫শ' থেকে সাড়ে ৬শ রোগী সেবা নিতে আসেন।
আরো জানা যায়, ৫০ শয্যার জন্য ডাক্তার থাকার কথা ২১জন । কাগজে কলমে আছে ১৭ জন। এর মধ্যে ২ জন রাজধানীর হাসপাতালে প্রেষণে আছেন। বর্তমানে ১৫ জন ডাক্তার হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। নাক, কা্ন, গলা,চক্ষু, আর্থোপেডিক, কার্ডিওলজির মত গুরুত্বপূর্ণ কনসালটেন্ট কেউ নেই।
সরেজমিনে হাসপাতালের ডাক্তারদের কক্ষ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটা কক্ষেই রোগীদের ভির। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন তারা। সবচেয়ে বেশি রোগী ছিল শিশু ডাক্তারের কক্ষে। কেউ কেউ প্রয়োজনীয় ঔষধ ও ডাক্তার দেখাতে না পেরে আক্ষেপ নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
এ সময় হাসপাতালের কম পক্ষে ১৫-২০ জন রোগীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, এখানে নাক, কান, গলা, চোখ ও হারের জন্য কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। হাসপাতালে শুধু রক্ত ও মলমুত্র পরীক্ষা করা যায়। অন্য সব পরীক্ষাগুলো বাহিরের ক্লিনিক ও ডায়গোনেষ্টি সেন্টারে করতে হচ্ছে। তাই ভালো চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা তারা। ডাক্তার স্বল্পতার কারণে লাইনে থেকেও ভালো করে ডাক্তার দেখানো যাচ্ছেনা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডাক্তারের কক্ষে যেতে পারলেও এক সাথে ২-৩ জন রোগীকে ২ মিনিটের মধ্যেই কোনরকম দেখে ঔষধ লিখে দিচ্ছেন। তাও হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছেনা।
উপজেলা স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. দুলাল হোসেন বলেন, আমাদের এ হাসপাতালে ডাক্তার ও লোকবলের সমস্যাটা সবচেয়ে বেশী। রোগীর তুলনায় ঔষধ কম।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মো.হাবিবুর রহমান বলেন, হাপাতালের ডাক্তার ও জনবল নিয়ে সমস্যার কথাগুলো জেনেছি।জেলা সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শুন্য পদে নিয়োগ ও প্রেষণে থাকা ডাক্তারদের পদগুলো বাতিল করে নতুন নিয়োগের জন্য বিভাগীয় পরিচালকের কাছে চিঠি লিখেছি। তাতে ভালো ফল পাচ্ছিনা। আমার কাজ আমি শুধু সাধ্যমত লিখে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের শিশুদের জন্য আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।