ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন ছিল নেত্রকোনার ছেলে হৃদয়ের । প্রতিবন্ধী কোটায় আবেদন করেছিলেন তিনি। এই কোটায় আসনও ফাঁকা ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে প্রতিবন্ধী কোটায় শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী হলেই কোটা প্রযোজ্য হবে। অন্য কোনো ধরনের প্রতিবন্ধীরা কোটায় ভর্তি হতে পারবেন না।
হৃদয় ছোটবেলা থেকেই হাঁটতে পারেন না। মায়ের কোলে চড়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা হৃদয়ের ওই দিনের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যেখানে ফুটে উঠে এক অদম্য মায়ের তার প্রতিবন্ধী সন্তানের প্রতি ভালোবাসা, সেই সন্তানের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধার অভাব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় খ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয়ে হৃদয়ের সিরিয়াল ৩ হাজার ৭৪০। যদিও এ ইউনিটে মোট আসন রয়েছে ২ হাজার ৩৮৩টি। সেখানে প্রতিবন্ধী কোটার আসন খালি রয়েছে। তবুও সে কোটায় ভর্তি হতে পারবে না হৃদয় সরকার। আর এভাবেই শেষ হলো এক মায়ের স্বপ্ন। ফিরে যেতে হবে নিজ এলাকায়।
জানা যায়, প্রতিবন্ধী হিসেবে সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে তালিকাভুক্তির সনদ গ্রহণ করেছেন 'সেরিব্রালপালসি'তে আক্রান্ত হৃদয় সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী কোটার ফর্ম সংগ্রহ করতে গেলে তাকে জানানো হয়, তিনি ওই কোটার মধ্যে পড়েন না। তাই মায়ের কোলেই চড়েই নেত্রকোনায় ফিরতে হবে হৃদয় সরকারকে।
হৃদয় সরকার বলেন, 'আমি ও আমার মা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কলা অনুষদের ডিন স্যারের কাছে গিয়েছিলাম ৷ তাঁরা বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ আর বাকপ্রতিবন্ধীদের কোটা সুবিধা দেওয়া হয় ৷ অন্য কোনো ধরনের প্রতিবন্ধীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তির ব্যবস্থা নেই৷'
হৃদয়ের মা গণমাধ্যমকে জানান, হৃদয় যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে তাহলে সপরিবারে ঢাকায় চলে আসবেন। তিনি বলেন, আমি বেঁচে না থাকলেও হৃদয় যেন চলতে পারে।