Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৯ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মামলায় হাজিরা দিতে এসে 'বনভোজন'

ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ 
প্রকাশিত: ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৪৮ PM
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৫০ PM

bdmorning Image Preview


বাড়ির উঠানে ৯ শতাংশ জমির উপর নতুন করে আরেকটি বাড়ির নির্মাণ কাজ করাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশির সাথে ঝগড়া। ঝগড়ার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আর এই ঘটনাটি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। বাদী পক্ষ চুরি ও জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই মহিলাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আর এমন ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হাতুর ইউনিয়নের মুখর গ্রামে।

জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে ৯ শতাংশ জমির উপর বাড়ি নির্মাণকে কেন্দ্র করে ঝগড়ার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনায় নওগাঁর আদালতে মামলা করেন প্রতিবেশি। এ মামলায় দুই মহিলাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করায় বিপাকে পড়ে বিবাদীপক্ষরা। সামান্য একটা বিষয় নিয়ে আদালত পর্যন্ত গড়াবে তা কল্পনা করতে পারেননি বিবাদী পক্ষ। গ্রামের মানুষ একটু বোকা ও সহজ সরল প্রকৃতির হয়ে থাকে। তাই দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন বিবাদী পক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সকালে দ্বিতীয় বারের মতো প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে মামলায় হাজিরা দিতে এসেছিলেন বিবাদী পক্ষ। এতোগুলো মানুষ বাসযোগে শহরে আসতে এবং খাবার খেতে অনেক টাকা খরচ হবে। এ ভেবে তারা ভটভট ভাড়া করে নিয়ে এসেছিলেন আদালতে। সাথে নিয়ে এসেছেন খড়ি, চাউল, হাড়িসহ রান্না করার আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র।

আদালত পাড়ায় আসার পর রান্নার কাজ শুরু করেন বিবাদীপক্ষের সাথে আসা বাড়তি দু'জন লোক। মামলায় হাজিরা দেওয়ার পর দুপুর ২টার দিকে আদালত পাড়ার পূর্বদিকে গণপূর্ত অফিসের সামনে সবাই পঞ্চায়েতের মতো খাবার খাচ্ছিলেন। কেউ চটি পেড়ে, কেউ পায়ের ভর দিয়ে, আবার কেউ মাটিতে বসে। এদের মধ্যে আবার কেউ সাকিদারী করছেন। দেখলে মনে হবে আদালত পাড়ায় কোন অনুষ্ঠান চলছে। আর সেখানে পঞ্চায়েতে সবাই খাবার খাচ্ছিলেন। মামলায় হাজিরা দিতে এসে ব্যতিক্রম এমন দৃশ্য দেখে আদালত পাড়ায় লোকজন অনেকটা অবাক হয়েছেন।

নওফেল হাসান নামে বিবাদী বলেন, সামান্য একটু জমি নিয়ে আদালত পর্যন্ত গড়াতে হবে তা কল্পনাই করতে পারিনি। সেই মামলায় আবার এতোগুলো আসামি। শুধু শুধু হয়রানি শিকার হচ্ছি দু'মাস থেকে। দুইবার আদালতে হাজিরা দিলাম। কবে জামিন হবে বুঝতে পারছিনা।

আরেক বিবাদী আমজাদ হোসেন বলেন, বাড়ি থেকে আদালতে আসা-যাওয়ার খরচ জনপ্রতি প্রায় ১২০ টাকা। হোটেলে শুধু ডাল, ডিম ও ভাত খেলে জনপ্রতি প্রায় ৫০/৬০ টাকা খরচ। মাছ বা গোস্ত ভাত খেলে আরও বেশি। আমরা হোটেলে না খেয়ে বাড়ি থেকে সবকিছু নিয়ে এসে এখানে রান্না করেছি। মুরগির গোস্ত ও সাথে আলু। এতে খরচও কম হয়েছে। আবারও খাবার মানও ভাল হয়েছে। তৃপ্তি সহকারে সবাই খেতে পেরেছি।

Bootstrap Image Preview