জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জেলার সেচ প্রকল্প, ক্ষুদ্র, মাঝারী ও বৃহৎ শিল্পকারখানাসহ অন্যান্য স্থাপনা এবং গ্রামীণ জনগণের মাঝে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে জনজীবন বহুমূখী উন্নয়নের প্রসার ঘটিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের অভিযোগ দ্রুত নিরসন, সিস্টেম লস হ্রাস, বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা প্রতিরোধ, বিদ্যুৎ চুরি রোধ, দ্রুত সংযোগ প্রদান, দৈনন্দিন ব্যয় হ্রাস, শ্রদ্ধাচার ইত্যাদির মাধ্যমে স্বচ্ছ ও গ্রাহকবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিনিত হয়েছে। জয়পুরহাটে ১৯৯৮ সাল থেকে এ সমিতির পল্লী বিদ্যুতের কার্যক্রম শুরু করে।
জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিতরণ উপকেন্দ্রের ক্ষমতা ১০৫ এমভিএ। সমিতি এ পযর্ন্ত ৮টি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ৫হাজার ১শ ৬৪ কি:মি: বিদ্যুৎ লাইনের সাহায্যে ২ লক্ষ্য ৩০ হাজার ৯'শ ৩৫ বিভিন্ন শ্রেণির গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে। এরমধ্যে আবাসিক গ্রাহক ২ লক্ষ ৭ হাজার ৩৯'শ, বাণিজ্যিক ১১ হাজার ২'শ ৬৩ জন, সেচ ৪ হাজার ৯'শ ৬৭, শিল্প ১৮'শ ও অন্যান্য ৩ হাজার ২'শ ৯৮ জন গ্রাহক রয়েছে।
জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪ হাজার ৯'শ ৬৯টি সেচ সংযোগ প্রদানের ফলে জেলার ৫টি উপজেলায় কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং কৃষকের ঘরে এখন অভাব না থাকার পিছনে এ সমিতির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। জয়পুরহাটের গ্রামাঞ্চলে হাস মুরগীর খামার, গরু ছাগলের প্রতিপালন, ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে অনেকেই বেকারত্ব ঘুচিয়ে সাবলম্বি হয়েছেন।
শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় নিঝুম পল্লী এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছানোর ফলে শিক্ষা ও সাংস্কৃতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। শিল্প কারখানা স্থাপিত হওয়ার ফলে বহু লোকের কর্মস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এবং বেকারত্ব কমায় জনগণ আর্থিকভাবে সফলতা লাভ করছে। এছাড়াও বিদ্যুতের আলোয় ঘরে ঘরে মোবাইল ফোনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাপক প্রসার লাভ করছে।
এখনকার মানুষ ঘরে ঘরে বসেই আবেদন করেই বিদ্যুতের সংযোগ পাচ্ছে এবং এসএমএস এর মাধ্যমে বিল পরিশোধ করতে পারছে। বিদ্যুৎ সুবিধার কারণে মানুষের সেবা খাত এখন অনেকটাই হাতের নাগালেই চলে এসেছে।
জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার রবিউল হক জানান, সমিতির আওতাভুক্ত এখানকার গ্রাহকগণ এখন নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে ৪টি উপজেলা ইতিমধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকী একটি উপজেলা নভেম্বরের মধ্যেই শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পূর্ণ হবে।
তিনি জানান,'শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যূৎ' এই শ্লোগানকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দূর্নীতি ও হয়রানি মুক্ত বিদ্যুতের অঙ্গিকার নিয়ে সততা ও আন্তরিকতার সাথে সকল কর্মকর্তা কর্মচারী সরকারের শতভাগ বিদ্যৎতায়ন কার্যক্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অনেক এগিয়ে চলছে যার উজ্জল দৃষ্টান্ত জাতীয় উন্নয়ন মেলায় ৫টি উপজের মধ্যে ১টিতে প্রথম, ৩টিতে দ্বিতীয় ও একটিতে ৯ম স্থান অর্জন করে সবার নজর কেড়েছে। সেই সাথে সুষ্ঠ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত হওয়ায় এ জেলার ব্যাপক শিল্প কারখানার ব্যাপক প্রসার হয়েছে এবং কৃষিতে বিদ্যুৎ সুবিধার কারণে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বপরি মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে । ভবিষ্যতেও জয়পুরহাটের মানুষের বিদ্যুতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।