একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৭টার দিকে গণভবনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের বৈঠক শুরু হয়েছে। কিন্তু, সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলের ২১ সদস্যের যাওয়ার কথা থাকলেও বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যাননি।
তিনি কেন সংলাপে যাননি তা জানতে সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর পুনরায় রাত ৯ টার দিকে ফোন দিলে আবারও বিএনপির এ নেতার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে গয়েশ্বরের বক্তিগত সহকারী মো. শাহীন বলেন, ‘বিকালের দিকে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন স্যার। এজন্য সংলাপে যেতে পারেননি।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, গয়েশ্বর দাদা অসুস্থ তাই যাননি। অসুস্থতার কারণে তিনি আজ গণঅনশনেও যাননি।
প্রথমে সবাই ভেবেছিল, সবার সঙ্গে গয়েশ্বরও আছেন। পরে রাতে জানা যায়, অসুস্থতার কারণে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সংলাপে আসতে পারেননি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পুর্ব নির্ধারিত ১৬ সদস্যের তালিকায় না থাকলেও পরে নতুনভাবে যুক্ত হন বিএনপির দুই নেতাসহ আরও পাঁচ নেতা। তারা হলেন -বিএনপির ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গণফোরামের মোকাব্বির খান, অ্যাডভোকেট জগদুল হায়দার আফ্রিক এবং আ ও ম শফিক উল্লাহ।
এই পাঁচ নেতার মধ্যে নির্ধারিত সময়ে ড. মঈন খান সংলাপে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে যান।
ফলে সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। আর ১৪ দলীয় জোটের ২৩ সদস্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ২০ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন। আর ১৪ দলের পক্ষে ২৩ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে গণভবনে প্রবেশ করেন ১৪ দলের নেতারা। এর ২০ মিনিট পর প্রবেশ করেন ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
এদিকে সংলাপে অংশ নিতে বিকেল ৪টায় ড. কামাল হোসেনের বাসায় বৈঠক করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। বৈঠকে সংলাপের এজেন্ডা ঠিক করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চিঠি পেয়ে সংলাপে যেতে ১৬ নেতাকে নির্বাচন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আর সংলাপ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে আজ আরো পাঁচজনকে যুক্ত করে তারা। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দেওয়া এক চিঠিতে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
সিদ্ধান্ত হয়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকুল্লাহও যোগ দেবেন সংলাপে। এঁদের মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ছাড়া অন্যরা সংলাপে যোগ দেন।
সংলাপে ১৪ দলের পক্ষে যাঁরা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংলাপে যোগ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মো. আবদুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু ও রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আবদুর রহমান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাসদের একাংশের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে যাঁরা
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সংলাপে অংশ নিয়েছেন দলের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক ও আ ও ম শফিক উল্লাহ এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস ও আবদুল মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, সহসভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না ও এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আ ব ম মোস্তফা আমিন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী।