ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তোলা চলচ্চিত্র পরিচালক ও ‘পদ্মাপাড়ের পার্বতী’ উপন্যাসের লেখক রফিক শিকদারের মা মারা গেছেন।
আজ বুধবার রাত ১০ টার দিকে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে মায়ের মৃত্যুর কথা জানান এ চলচ্চিত্র পরিচালক।
স্ট্যাটাসে রফিক শিকদার লিখেন, পাষাণ ডাক্তারের নির্মমতার কাছে জীবন যুদ্ধে হেরে গেছেন আমার মা। আমাদের ছয় ভাই বোনদের বিচারহীনতার নরকে ফেলে রেখে অভিমানে এইমাত্র ওপারে চলে গেলেন আমার মা।
এর আগে গত রবিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বিএফডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুল চিকিৎসায় নিজের মায়ের দুই কিডনি হারিয়ে ক্লিনিক্যালি ডেড হবার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার দাবি করেন এ লেখক।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ডাক্তার কর্তৃক কিডনী খোঁয়ানো মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ানো (Clinically Dead) অভাগা মায়ের হতভাগা সন্তান হিসেবে দোষী ডাক্তার হাবিবুর রহমান দুলাল ও তার সহযোগীদের বিচার চাই।
তিনি বলেন, ‘প্রিয় নেত্রী, আমি সেই মায়ের সন্তান, যে মা আপনার প্রেমে অন্ধ। যাঁর ধ্যানে জ্ঞানে বঙ্গবন্ধু, হাসিনা, রেহেনা। আমার মা সেই মা, যে মা নৌকা ছাড়া ধানের শীষ দাঁড়িপাল্লা লাঙ্গল চেনে না। বাল্যকাল থেকে যে মা তাঁর সন্তানকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনুরাগী করে তুলেছিল, হাসিনা রেহেনাকে ভালবাসতে বলেছিল। আমি সেই মায়ের সন্তান, যে ২০০৩ সালের একুশে বই মেলায় প্রকাশিত তার প্রথম উপন্যাস (পদ্মাপাড়ের পার্বতী) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর পবিত্র স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করেছিল। ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শবাদীদের প্রতিহিংসার শিকার হবো জেনেও যে মায়ের সন্তান তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র (ভোলা তো যায় না তারে) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টে জাতির জনক পরিবারের সকল শহীদের প্রবিত্র স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করেছিল। ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার পর স্থানীয় বিএনপি’র ভূতুরে মিথ্যা মামলায় যে মায়ের সন্তানকে জেলে যেতে হয়। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর যে মায়ের সন্তানদেরকে সাজানো মামলায় কোর্টে হাজিরা দিতে হয়। যে মা ভোটের দিনে আজীবন নৌকায় সিল মারে, নৌকায় সিল মারতে শেখায়।ছোট বেলা থেকে যে মায়ের মুখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নাম শুনে বড় হয়েছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম মুজিব, জামাল, কামাল, রাসেল এর স্থিরচিত্রের দিকে তাকিয়ে যে মাকে অসংখ্যবার অশ্রু ঝরাতে দেখেছি, সেই মা আজ নিষ্ঠুর ডাক্তারের নির্মমতায় কিডনী খুঁইয়ে দু:সহ যন্ত্রণার সাক্ষী হয়ে (Clinically Dead) মৃত্যু থেকে কিঞ্চিৎ দূরে।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রফিক শিকদার বলেন, ‘গত ২৭/০৬/২০১৮ তারিখে আমার মায়ের বাম কিডনীতে সমস্যা জনিত কারণে ঢাকার মিরপুরস্থ বিআইএইচএস হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানকার মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী আমার মায়ের দুটো কিডনীর একটিতে (বাম কিডনী) পাথর আবিস্কৃত হয়। ফলশ্রুতিতে মূত্রনালী ব্লক হয়ে তাঁর বাম কিডনী অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যায়। ফলে মায়ের খুব শারীরিক কষ্ট হচ্ছিল। এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে মা’কে বিআইএইচএস হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ০১/০৭/২০১৮ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ইউরোলজী বিভাগের প্রফেসর হাবিবুর রহমান দুলাল এর তত্ত্বাবধানে ভর্তি করি। মা’কে হাসপাতালে ভর্তির প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়। ক্যাথেটারের মাধ্যমে বাম কিডনীতে জমা হওয়া ইনফেকশনযুক্ত ইউরিন অপসারণের মাধ্যমে মা’র শারীরিক অবস্থাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা হয়। উক্ত হাসপাতালে কিছুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৫/০৭/২০১৮ তারিখে কিছুদিনের জন্য মা’কে রিলিজ দেয়া হলে তাঁকে নিয়ে আমরা গ্রামের বাড়ি পাবনাতে চলে যাই। কিছুদিন পর মা শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে।
গত ২৭/০৮/২০১৮ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ইউরোলজী বিভাগের ডাক্তার সুলতান ফোন করে মা’কে নিয়ে ঢাকায় আসতে বললে ২৮/০৮/২০১৮ তারিখে মা’কে ঢাকায় এনে উক্ত হাসপাতালের ইউরোলজী বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল এর অধিনে পূণরায় ভর্তি করি। বিভিন্ন পরীক্ষার নিরীক্ষার পর অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল আমার মায়ের বাম কিডনী কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।
চলতি মাসের ০৫/০৯/২০১৮ তারিখে প্রফেসর হাবিবুর রহমান দুলাল এর তত্বাবধানে হাসপাতালের দশম তলার অপারেশন থিয়েটারে মা’র অপারেশন সম্পন্ন হয়। কিন্তু অপারেশন শেষে মা’কে পোস্ট অপারেটিভ এ রাখার পর জানতে পারি মায়ের ইউরিন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। আনুমানিক রাত ১২টার দিকে কর্তব্যরত ডাক্তার আমাকে বলেন যে, আপনার মায়ের অ্যাকুইট রেনাল ফেইলুর। অর্থাৎ অপারেশনের পর থেকে ডানপাশের সুস্থ কিডনীটি আর কাজ করছে না, দ্রুত উনাকে আইসিইউতে নেয়ার ব্যবস্থা করুন। সঙ্গে তিনি এটাও বলেন যে, আমাদের হাসপাতালে আইসিইউ খালি নেই, কোনো প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়ার ব্যবস্থা করুন।
অত:পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ডিউটি ডাক্তারের কথা মতো ০৬/০৯/২০২৮ তারিখে সকাল ৭টার দিকে ইনসাফ বারাকাহ কিডনী এন্ড জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে মাকে ভর্তি করি।
একদিন পর ০৭/০৯/২০১৮ তারিখে ইনসাফ বারাকা কিডনী এন্ড জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার হুমায়ূন কবীর সেলিম মায়ের কিডনীর অবস্থা পর্যালোচনার জন্য ল্যাবএইড হাসপাতাল হতে সিটিস্ক্যান করতে বলেন। ০৭/০৯/২০১৮ তারিখে ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে সিটিস্ক্যান করার পর রিপোর্ট মারফত মায়ের পেটে কোনো কিডনীর অস্তিত্ব নেই বলে জানতে পারি। বিষয়টি জানার পর ইনসাফ বারাকাহ কিডনী এন্ড জেনারেল হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম সাহেব অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল এর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং মাকে পুনরায় পিজি হাসপাতালে ভর্তির জন্য পরামর্শ দেন।
এমতাবস্থায় পথহারা পথিক, কুলহারা নাবিকের মতো টালমাটাল হয়ে উপায় খুঁজতে থাকি আমি। পরেরদিন ০৮/০৯/২০১৮ তারিখে মাকে নিয়ে পিজি হাসপাতালের ইউরোলজী বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল এর কাছে যাই। ঐ দিনই তিনি মাকে পুনরায় তাঁর অধীনে ভর্তি করে নেন। আমি উনার কাছে ল্যাবএইড হাসপাতালের সিটিস্ক্যান রিপোর্ট দাখিল করে মায়ের পেটের ডান পাশের সুস্থ কিডনী না থাকার কারণ জানতে চাই। তিনি আমাকে অন্য হাসপাতালের ডাক্তারের কথায় বা সিটিস্ক্যান রিপোর্টে বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দেন এবং মা ভাল হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন। অত:পর প্রতি মুহূর্তে মায়ের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। নিয়ন্ত্রনহীন গতিতে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায়। অপারেশনের আগ-মুহূর্ত পর্যন্ত যে মায়ের ক্রিয়েটিনিন ছিল পয়েন্ট ৬১, অপারেশনের তিনদিন পর সেই ক্রিয়েটিনিন এসে দাঁড়ায় ৬ পয়েন্টের কাছাকাছি। মায়ের শরীরে পানি জমে অস্বাভাবিক মাত্রায় ফুলে যায়। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দুলতে থাকে আমার অভাগা মায়ের জীবন প্রদীপ। অত:পর শুরু হয় ডায়ালাইসিস।
অবস্থা বেগতিক দেখে চিত্রনায়ক নিরব এর পরামর্শে ১৯/০৯/২০১৮ তারিখে মাকে নিয়ে বিআরবি হাসপাতালের নেফ্রলজি বিভাগের প্রধান ডাক্তার এম এ সামাদ এর দ্বারস্থ হই। অত্যান্ত বিনয়ী স্বভাবের ডাক্তার মহোদয় সমস্ত মেডিকেল রিপোর্ট পর্যোলোচনার পর পুনরায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করে মায়ের পেটে কোনো কিডনীর অস্তিত্ব না থাকার বিষয়টি ব্যথিত কণ্ঠে জানিয়ে দেন।
এরপর বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম সক্রিয় হয়ে উঠে। আমার মা রওশন আরা বেগমের সকল রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রথম দিকের খবরের সঙ্গে পরের খবর মিলিয়ে দেখলে তাতে ডাক্তার সাহেবের প্রথম দিকের কথার সঙ্গে পরের কথাগুলোর অসঙ্গতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক (যাঁর অধিনে আমার মা ভর্তি ছিল এবং যিনি আমার মা’কে অপারেশন করেছিলেন) হাবিবুর রহমান দুলাল সাহেব মিডিয়ার সামনে প্রথমে চ্যালেঞ্জসহকারে বলেছিলেন রফিক সিকদার এর মায়ের ডান কিডনী অবশ্যই আছে। কিন্তু অপারেশনের পর ডান কিডনী হঠাৎ নন ফাংশনাল হয়ে যাওয়ার কারণে সিটিস্ক্যান ও আল্ট্রাস্নোগ্রাম রিপোর্টে কিডনী ভিজ্যুয়ালাইজ হচ্ছে না।
পরে অন্যান্য কিডনী বিশেষজ্ঞগণের যুক্তির কাছে প্রফেসর হাবিবুর রহমান দুলাল সাহেবের মনগড়া, ঠুনকো এবং মেডিকেল সায়েন্স এর পরিপন্থীমূলক যুক্তিটি খন্ডন হয়ে যায়। বিআরবি হাসপাতালের নেফ্রলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর এম.এ সামাদ শরীরে কিডনী থাকলে অপারেশন পরবর্তী নন ফাংশনাল হওয়া কিডনীও আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট বা সিটিস্ক্যান রিপোর্টে স্পস্ট হয়ে উঠবে বলে গণমাধ্যমে মতামত ব্যক্ত করেন।
প্রথম যুক্তিতে হেরে গিয়ে জনাব হাবিবুর রহমান দুলাল সাহেব নতুন করে যুক্তি দ্বার করে বলতে থাকেন রফিক সিকদারের মায়ের কিডনীটি প্রকৃতিগতভাবেই জোড়া লাগানো ছিল। যে কারণে নষ্ট কিডনীটি ফেলতে গিয়ে অপারেশনকৃত স্থানে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। যা পরে বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে আমার সহকারী ডানদিকের সুস্থ কিডনীটিও ফেলে দিতে পারেন বলে মনে করছি। অথচ অপারেশনের পূর্বের সিটিস্ক্যান রিপোর্ট, আল্ট্রাস্নোগ্রাম এর একাধিক রিপোর্ট বলছে আমার মায়ের দুটো কিডনীই আলাদা আলাদা স্থানে আবদ্ধ ছিল।
দোষী ডাক্তারের ভুল যুক্তির প্রেক্ষিতে গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংগঠন এবং আমার প্রাণের চলচ্চিত্র পরিবার বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়ে উঠলে গত ১/১০/২০১৮ তারিখে অভিযুক্ত অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল অপরাধের দায় লিখিতভাবে স্বীকার করে নেন এবং নিজ খরচে আমার মায়ের কিডনী প্রতিস্থাপনের যাবতীয় দায়িত্ব লিখিতভাবে গ্রহণ করেন। লিখিত চুক্তি হবার পর মায়ের সুস্থতার স্বার্থে অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে আপাতত আমরা মামলা দায়ের করা থেকে বিরত থাকি।
এরপর আমার মূমুর্ষ মায়ের কিডনী প্রতিস্থাপনের প্রশ্নে অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল বিভিন্ন উপায়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। ফলশ্রুতিতে আমার মা রওশন আরা’র শারীরিক অবস্থা ক্রমাগত অবনতির দিকে ধাবিত হতে থাকে। বর্তমানে দু:সহ যন্ত্রণার ভিতর দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের আইসিইউ এর বেডে নিথর দেহ পড়ে আছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেছেন, ‘হে দরদী নেত্রী স্থানীয় বিএনপির সন্ত্রাসী দ্বারা একাধিকবার শারীরিকভাবে নির্যাতিত হওয়ার পরেও যে মা কখনো নৌকা ছাড়তে বলেন নি। একটু সুযোগ পেলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁর প্রিয় সন্তানকে প্রাণে মেরে ফেলবে জেনেও যে মা কখনোই বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কন্যার প্রতি ভালবাসা প্রদর্শনে নিষেধ করেন নি, সেই মায়ের বাম পাশের নষ্ট কিডনী ফেলতে গিয়ে ডাক্তারের দুর্বৃত্তপনায় ডান পাশের ভাল কিডনীটিও আজ উধাও!
আপনাকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো এভাবে বলার প্রয়োজন পড়তো না, যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্বিবদ্যালয় হাসপাতালে ঘটনাটি না ঘটতো অথবা আমার নেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় না থাকতেন। কেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সুযোগ্য তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা নামটির সঙ্গে আমার পরিবারের প্রতিটি সদস্যের আবেগ জড়িত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার মাধ্যমে জানতে চাই, আমাদের মতো অসহায় মানুষের চোখের জল আর আবেগের মূল্য না বোঝা অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল সাহেব কোন যোগ্যতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চাকরি করছেন? কিডনী ডাকাতির মতো এতো বড় অপরাধ করার পরেও তিনি নিজ পদে বহাল তবিয়তে থাকেনই বা কোন খুঁটির জোরে?
প্রাণের নেত্রী আপনার কাছে কে বড়? আমার অসহায় মা নাকি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল? আপনি কার? শোষকের নাকি শোষিতের? নিশ্চয় আপনি শোষিতের পক্ষে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এতোগুলো গণমাধ্যমে খবরটি প্রচার/প্রকাশ হওয়ার পরও দোষী ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণটা খুব জানতে ইচ্ছে করে! প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া খবরটি সম্পর্কে আপনার প্রেস সচিব বা সংশ্লিষ্ট কেউ কি আপনাকে অবহিত করেছিলেন? যদি না করে থাকেন তাহলে এ ব্যর্থতা কার?
প্রিয় নেত্রী, প্রিয় প্রধানমন্ত্রী কার দোয়া আপনার সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন? কসাই ডাক্তারের নাকি আমার নিরপরাধ অসহায় মায়ের? কোন শ্রেণীর মানুষের ভোটে আপনি বারবার ক্ষমতায় আসেন? নিশ্চয় আপনি আপামর জনসাধারণের নেত্রী।
প্রিয় মাদার অব হিউমিনিটি, ডাক্তার সাহেব কত টাকার বিনিময়ে আমার বোকাসোঁকা মায়ের কিডনীটি অন্যত্র বিক্রি করেছেন তা জানার চেষ্টা করবেন কি? সবিনয়ে জানতে চাই প্রিয় নেত্রী আমার মায়ের সঙ্গে করা এই অন্যায়ের বিচার শেষ পর্যন্ত পাবো কি? সুবিচার ও আপনার সদুত্তরের প্রতীক্ষায় রইলাম। অন্যথায় জিতে যাবে ডাক্তার। ডাক্তার জিতলে হেরে যাবে মানবতা।’