Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

একসঙ্গে লাখো জনতাকে শপথ করিয়ে রেকর্ড করলেন শামীম ওসমান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:১৮ PM
আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:১৯ PM

bdmorning Image Preview


প্রধানমন্ত্রী ও দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচল আস্থা রাখার জন্য নারায়ণগঞ্জে লাখো জনতার সমাবেশে শপথ পড়িয়েছেন শামীম ওসমান।

শনিবার নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইর এলাকায় একেএম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে 'জেগেছে নারায়ণগঞ্জ, জেগে ওঠো শেখ হাসিনার বাংলাদেশ' স্লোগানকে সামনে রেখে এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জনতাকে এই শপথবাক্য পাঠ করিয়ে স্মরণকালের বৃহত্তম গণজমায়েতের রেকর্ড করলেন দলটির প্রভাবশালী নেতা ও এমপি একেএম শামীম ওসমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম ওসমান বলেন, এ জনসুমদ্রের ঢেউয়ের উত্থান সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আজকের মহাসমাবেশ। কারণ, ইতিহাস সাক্ষী, এই নারায়ণগঞ্জ ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ, ৯০’র গণঅভ্যুত্থানে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। আজ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে, দেশের অর্থনীতির চাকাকে থামিয়ে দিতে যে অপশক্তি শকুনের থাবা মারতে বসে আছে, তাদের বিরুদ্ধে এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই দেশ রক্ষার যুদ্ধ শুরু হোক।

শামীম ওসমান বলেন, আগামী নির্বাচনকে উদ্দেশ করে এ জনসভা ডাকা হয়নি, নির্বাচন বানচাল করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তাদের মোকাবেলা করার জন্য এ জনসভার আহ্বান করা হয়েছে। আজকের নারায়ণগঞ্জের এ জনসমুদ্র প্রমাণ করেছে দেশে মুক্তিযোদ্ধার সপক্ষের শক্তি কতটা শক্তিশালী।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কড়া সমালোচনা করে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, ড. কামাল হোসেন জ্ঞানপাপী। আর এই জ্ঞানপাপীর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। কিন্তু শয়তান শয়তানি করেও কিছু করতে পারে না, এই ঐক্যফ্রন্টও পারবে না। আপনারা নারায়ণগঞ্জ এসে দেখুন, কতোজন জনগণ আপনাদের পাশে আছেন? কামাল গংরা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ঐক্যজোট করেছেন। ঐক্যফ্রন্ট দেশে নির্বাচন চায় না। তারা লাশ চায়, দেশে উলফা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এসবের কিছুতেও আমরা বিচলিত নই। কারণ আওয়ামী লীগের রাজনীতি জনগণকে নিয়ে।

শামীম ওসমান বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবের নারায়ণগঞ্জে যেদিন কর্মসূচি ছিল ওইদিনই ফতুল্লায় চেকপোস্টে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে গেছে। একই ঘটনা ঘটেছে সাভার ও গাজীপুরে মন্ত্রীর প্রোগ্রামের আগের রাতে।

এসব ঘটনার জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে শামীম ওসমান বলেন, কী চান আপনারা? ২১ আগস্টের হামলাকারীদের ক্ষমতায় আনতে চান? নাকি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আবারও দেশে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করতে চাইছেন। কিন্তু আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা, মুক্তিযুদ্ধে প্রজন্ম যতদিন বেঁচে আছি এই দেশের মানচিত্রে আঘাত করতে দিব না। জনগণের ওপর হামলা করলে আপনারা টিকতে পারবেন না। এত দিন নেত্রীর কথায় ধৈর্য ধরেছি। কিন্তু আর না। জনগণের ওপর হামলা করলে বসে থাকব না।

তিনি বলেন, আমার কোনো নেতাকর্মীর ওপর হামলা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেব। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমি সবাই অনুরোধ করব। আপনারা প্রস্তুত থাকেন। এ লড়াইয়ে আমরা জিতব। আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন শেখ হাসিনা। আবারও ক্ষমতায় আসবে আওয়ামী লীগ। সবাই চোখ কান খোলা রাখতে হবে। শত্রু কিন্তু আমাদের ভেতরেও আছেন।

শামীম ওসমান বলেন, শুনতে পাই যুদ্ধাপরাধী অনেক পরিবারের সঙ্গে আমাদের অনেকের লোকজন যোগাযোগ রাখছেন।

বক্তব্যের শেষে শামীম ওসমান বলেন,আবার কবে দেখা হবে জানি না। ভুল হলে আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করে দেবেন। চেষ্টা করেছি উন্নয়ন করতে আপনাদের পাশে থাকতে। আমি আপনাদের কাছে ঋণী হয়ে গেলাম। ঋণী হয়ে থাকলাম।

জানা যায়, বিকাল ৩টায় সমাবেশের প্রধান অতিথি শামীম ওসমান এমপি মঞ্চে ওঠার আগেই ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় নেতাকর্মী সমর্থকে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রং বেরঙের ব্যানার ফ্যাস্টুন আর বাদ্যবাজনা নিয়ে আসা কয়েক লাখ মানুষ অবস্থান নেন আশপাশের বহুতল ভবনের ছাদে ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। একপর্যায়ে বিকাল ৫টার দিকে সমাবেশ শেষ হওয়ার পরও চারদিক থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলের দিকে আসছিল।

ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইফউদ্দিন আহমেদ দুলাল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রমুখ।

Bootstrap Image Preview