সৌদি রাজতন্ত্রের বিরোধী এবং দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর কঠিন আন্তর্জাতিক চাপে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তবে যুবরাজকে রেহাই দেয়ার জন্য তার পিতা বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে ট্রাম্প হত্যাকাণ্ডে যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দিয়েছেন। হত্যার সব তথ্য-প্রমাণ হাতে রয়েছে বলে দাবি করছে তুর্কি কর্মকর্তারা। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান বলছেন, কিলিং স্কোয়াডের সদস্যদের এবং এর প্রধান নির্দেশদাতাকেও বিচারের কাঠগড়ায় তোলা হবে। এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত কী ঘটে সেটাই দেখার বিষয়।
সৌদি নিরাপত্তা বিভাগের হাতে দেশটির সরকার বিরোধী সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিহত হওয়ার পর ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন সৌদি রাজা। কিন্তু সৌদি সরকারের জড়িত থাকার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তারা হত্যার কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়।
সৌদি রাজা বিষয়টিকে এমনভাবে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছে যাতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কোনো দোষ না থাকে। কিন্তু বিশ্বের কোনো দেশই এমনকি সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্ররাও ওই ব্যাখ্যা মেনে নিতে পারেনি।
নজিরবিহীন আন্তর্জাতিক চাপ থেকে যুবরাজ সালমানকে নিরাপদে রাখার জন্য গুপ্তহত্যার দায় অধীনস্থ কর্মকর্তাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছে রিয়াদ সরকার। যেকোনো স্বৈরসরকারই তাদের কোনো বড় ধরনের অপরাধের ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে এর দায় অধীনস্থ কর্মকর্তাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে। সৌদি রাজা সালমানও একই কৌশল অবলম্বন করেছেন।
সৌদি গোয়েন্দা বিভাগের উপপ্রধানের পদ থেকে আহমাদ আল আসিরি ও রাজার আইন উপদেষ্টা সৌদ আল কাহতানিসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক চাপ কমাতে সৌদি আরবের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কাঠামো সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়েছেন দেশটির রাজা ও যুবরাজ। গত ২০ অক্টোবর সৌদি রাজা সালমান ওই সংস্কারের নির্দেশ দেন।
তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক চাপ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সৌদি রাজা সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের এসব পদক্ষেপ বাস্তবতা থেকে পালানোর চেষ্টা। আন্তর্জাতিক সমাজ বিশেষ করে অধিকাংশ দেশের নেতারা মনে করেন, যুবরাজ সালমানের নির্দেশে সাংবাদিক খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। এ অবস্থায় যতই সৌদি আরবের গোয়েন্দা কাঠামোতে সংস্কার করা হোক না কেন তাতে অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না।