২২ বছরের যুবক দেশের সবচেয়ে লম্বা মানুষ কক্সবাজারের যুবক জিন্নাত আলীর জন্ম ১৯৯৮ সালে। তার বয়স তার উচ্চতা ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি। শারীরিক সমস্যার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি আছেন তিনি।
জিন্নাতের বর্তমান উচ্চতা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুকে না থাকলেও তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা মানুষ বলে মনে করা হচ্ছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা জীবিত মানুষ তুরস্কের সুলতান কশেন। ১৯৮২ সালে জন্ম নেওয়া কশেনের উচ্চতা ৮ ফুট ৩ ইঞ্চি। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ২০০৯ সালে তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তির স্বীকৃতি দেয়। আর জিন্নাত সেই কশেনের চেয়েও তিন ইঞ্চি লম্বা।
শারিরিক সমস্যা নয়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিন্নাতকে যে খাবার দেওয়া হয়, তা নিয়েও রয়েছে তার সমস্যা। তার কাছে এটি খুবই কম খাবার। তার ক্ষুধা দেখে বিএসএমএমইউ'র ডি-ব্লকের অন্যান্য রোগীরাও এগিয়ে আসেন। চার-পাঁচ জন মিলে হাসপাতাল থেকে দেওয়া নিজেদের খাবার দিয়ে দেন জিন্নাতকে।
হাসপাতাল পরিচালক বিষয়টি জানার পরই তার খাবারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেন। জিন্নাতের পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করেছে তারা। এ নির্দেশে এখন থেকে প্রতি বেলায় ছয় জনের খাবার দেওয়া হবে তাকে। যা প্রতিদিন ১৮ জনের সমান। একইসঙ্গে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন তিনি।
বুধবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন জিন্নাত আলী। প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। সে অনুযায়ী বিএসএমএমইউতে তার সম্পূর্ণ ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হরমোন ও থাইরয়েডের সমস্যার কারণে জিন্নাত অস্বাভাবিকভাবে লম্বা হয়ে গেছে।
তার মা শাহপুরী বেগম। তারা তিন ভাই, এক বোন। ভাই-বোনদের মধ্যে জিন্নাত তৃতীয়। অভাবের সংসারে একমাত্র কর্মক্ষম তার ভাই ইলিয়াস। আর ১৪ বছর থেকে জিন্নাতের শরীর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে কাজ করা হয়ে উঠেনি তার।
জিন্নাত আলী বলেন, আমি আতপ চালের ভাত খাই, যেটা এখানে নেই। তাছাড়া এখানে রান্নার মানও ভালো না। তবে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়ার কথা শুনে হাসি দেখা গেলো তার মুখে। সঙ্গে গিনেস বুকে তার নাম ওঠানোর চেয়ে নিজের সুস্থতাই বেশি জরুরি বলে মনে করেন জিন্নাত।