Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পর্যাপ্ত ডাক্তার ও এ্যাম্বুলেন্স না থাকায় চরম দূর্ভোগের শিকার রোগীরা

সোহেল রানা, হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১২:১৭ PM
আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১২:১৮ PM

bdmorning Image Preview


হিলি-হাকিমপুর উপজেলায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এ মানুষগুলোর চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।কমপ্লেক্সটিতে ১৩ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে তিন জন ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এক দিকে ডাক্তার সংকট অন্য দিকে একটি মাত্র এ্যাম্বুলেন্স সেটাও আবার বিকল হওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।

জেলা শহর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত হিলি-হাকিমপুর উপজেলা। উপজেলাটি সীমান্তবর্তী ও স্থলবন্দর হওয়ায় এলাকাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও এখানকার মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবার কথা ভেবে সরকার ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করে। তবে ৫০ শয্যা একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে পরিমাণে ডাক্তার থাকার কথা সে পরিমাণে ডাক্তার নেই। ৫০ শয্য উন্নিত করা হলেও এখন তার কোন কার্যক্রম চালু হয়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে। উদ্বোধনের প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন কাযক্রম চালু হয়নি বিল্ডিংটিতে।

এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে একটি মাত্র এ্যাম্বুলেন্স সেটিও আবার বিকল হওয়ায় জরুরী রোগীকে বাহিরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে দ্বিগুন ভাড়া দিতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগীদের। আবার কোন রোগী বাহিরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাবার পথে পথিমধ্যে মারা যাচ্ছে। সর্বশেষ বিআরটি কতৃর্ক এই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর এ্যাম্বুলেন্সটিকে অকেজো ঘোষণা করা হলেও আজও মিলেনি একটি নতুন এ্যম্বুলেন্স। এতে করে চরম ভোগান্তিতে আছে এখানকার জনসাধারণ। 

চিকিৎসা নিতে আসা একজন রোগী জানান, আমি গরিব মানুষ বাবা। আমার তো আর টাকা পয়সা নাই যে ভালো জায়গায় চিকিৎসা করব। তাই হিলি হাসপাতালে আসলাম, এসে শুনি এখানেও নাকি ডাক্তার নেই, তাহলে আমরা কথায় যাব বাবা?

চেচঁড়া গ্রামের মাসুদ জানান, আমি আমার মামীকে এখানে ভর্তি করাতে নিয়ে এসেছি। এখানে আসার পর শুনলাম এখানে ডাক্তার তেমন নেই, পযাপ্ত অক্সিজেন নেই। এখন বাহিরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাবো তাই হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স এর ডাইভারকে ফোন করলাম এ্যাম্বুলেন্সের এর জন্য।কিন্তু শুনলাম এখানে এ্যাম্বুলেন্সও নেই। বাহিরে থেকে গাড়ি ভাড়া করলাম সেই গাড়িতে পযাপ্ত অক্সিজেন নেই। যদি পথিমধ্যে আমার মামী মারা যায় এর দায়দায়িত্ব কে নিবে?

এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মোঃ-রায়হান হাকিম বলেন, আমাকে এখনও রোগীর আত্মীয়স্বজনরা ফোন দিয়ে বলে, ভাই গাড়িটা আনেন আমার মামীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাবো। এই কথাগুলো শুনলে আমার খুব কষ্ট লাগে। আমার বসে থাকার ইচ্ছে থাকে না। কারণ সাধারণ মানুষ যখন চিকিৎসা নিতে এসে এ্যাম্বুলেন্সের অভাবে ভোগান্তিতে পড়ে। আমি তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মেডিকেল অফিসার আহসান আলী সরকার বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১৩ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও মাত্র ৩ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। আর এ অল্পসংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ডাক্তারদের।

দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ-শিবলী সাদিক বলেন, এ্যম্বুলেন্সের জন্য আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ে একটি ডিওলেটার পাঠিয়েছি। খুব দ্রুত এটার সমাধান হবে। রোগীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ও এলাকটির চিকিৎসা সেবার গুরুত্বের কথা ভেবে সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।

সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান চান এলাকাবাসীরাও। যাতে করে এলাকার মানুষ আবারো ফিরে পায় চিকিৎসা সেবা।নআর চিকিৎসা সেবা যাতে নিশ্চিত হয় সেক্ষেত্রে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে জনবল নিয়োগসহ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। 


 

Bootstrap Image Preview