মা হারা শিশু লামিয়া আক্তার মরিয়ম (১২)। বাবা ঢাকায় রিকশা চালান। বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকার মেয়ে সে। গৃহকর্ত্রীর হাতে নির্যাতিত হয়ে শিশু গৃহপরিচারিকা লামিয়া এখন চিকিৎসা নিচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সে জানিয়েছে কিভাবে তাকে নির্যাতন করা হয়।
লামিয়া জানায়, গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রী দুই জনই কারণে-অকারণে একসঙ্গে তাকে শারীরিক নির্যাতন করত। বাসায় আটকে রেখে বেতের লাঠি, কাঠের বেলুন দিয়ে তাকে মারধর করা হতো।
শুধু তাই নয়, এবং মাঝে মধ্যে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিত তারা। সবশেষ গত সোমবার (১৫ অক্টোবর) না বলে চিনি খাওয়ার অপরাধে প্রথমে বেত ও বেলুন দিয়ে অনেক মারধর করা হয় তাকে। পরে নখে সুই ঢুকিয়ে আমার মাথার চুল কেটে দেয় তারা।
লামিয়া জানায়, সে ছয় মাস আগে আশরাফুল-শারমিন দম্পতির বাসায় আসে। প্রথম সে তাঁদের ছোট বাচ্চাকে দেখাশোনা করত। পরে তাকে দিয়ে বাড়ির ভারী কাজ করতে বাধ্য করা হতো। কাজ পছন্দ না হলে তাকে মারধর করতেন তারা।
চোখ ফুলে যাওয়ায় দেখতেও সমস্যা হচ্ছে তার। অসহায় অবস্থায় মরিয়ম আর্তনাদ করেছে, ‘ওদের হাত থেকে আমাকে বাঁচান’। শরীরের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে আঘাতের চিহ্ন নেই। চোখ-মুখ এবং পুরো শরীর ফুলে উঠেছে।
প্রতিদিন রাতে মরিয়মের কান্না আর চিৎকারের বিষয়টি ডিবি পুলিশকে জানিয়ে একটি অভিযোগ দেয় প্রতিবেশীরা। সোমবার রাতে বরিশাল নগরীর কাশীপুর আনসার ক্যাম্পের পেছনে মদিনা সড়কের আকাশ মঞ্জিলে অভিযান চালিয়ে মরিয়মকে উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অসীম কুমার বলেন, শিশুটি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগতে পারে। তবে আশঙ্কার কিছু নেই।