ব্যাপক আয়োজন এবং দর্শকপ্রীতির ভেতর দিয়ে গতকাল শেষ হয়েছে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে ৭ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান খেলনা উৎসব।
গতকাল শনিবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৮ টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে দেশের প্রথম জাতীয় পর্যায়ের খেলনা উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এবং “খেলনা ব্যাংক” এর উদ্যোগে “জাতীয় শিশু অধিকার সপ্তাহ” উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপি এই উৎসব শুরু হয় ৭ই অক্টোবর থেকে। মেলার উদ্বোধন করেছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
২০১৫ সাল থেকেই খেলনা ব্যাংক এবং বিল্ড বাংলাদেশ শিশুদের বিনোদনের ভেতর দিয়ে শিক্ষা দেওয়ার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের প্রথম স্কুলভিত্তিক খেলনা লাইব্রেরিটি তাদেরই করা।
মেলাতে যেমন ছিল সমসাময়িক নতুন প্রযুক্তির নানাধর্মী খেলনা, তেমনি ছিল গ্রামীণ খেলনার হাত যেখানে দেখা গিয়েছে, বিলুপ্ত প্রায় খেলনাসমুহ। বায়স্কোপ দেখা, লুডো খেলা, কুত-কুত খেলা, কানামাছি ইত্যাদি এমনকি টয় ট্রেনের জন্য ছিল আলাদা জায়গা। আমন্ত্রন দেওয়া হয়েছে দেশের স্বনামধন্য খেলনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
আয়োজন করা হয়েছে হাড়ি ভাঙা খেলার, ভাইকিং বোট, মিনি রেল গারি, ঘোড়া, মিউজিক্যাল গাড়ি, রিক্সা এবং ছিল মুড়ি-মুড়কির ব্যাবস্থাও। পুরস্কারে কেউ জিতেছে জামা, কেউ আবার পুতুল। প্রতিদিন ৭৮ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে খেলনা বিতরণ করেছে খেলনা ব্যাংক।
বাচ্চাকে সাথে নিয়ে ঘুরতে এসে এডিসি শরীফ রায়হান বলেন, এই ধরনের আয়োজন বারবার হওয়া উচিত তাহলে এই প্রজন্মের শিশুরা টেলিভিশন এবং মোবাইলের পর্দা থেকে চোখ সরিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে সামাজিকভাবে বড় হওয়ার স্বাদ পাবে।
অনেকগুলো স্টলের ভেতর সবচেয়ে বেশি শিশুদের আকর্ষিত করেছে “বিনো” স্টলটি। সেখানে প্রি-প্রাইমারির শিশুদের জন্য করা হয়েছে চমৎকার একটি অ্যাপ। বাকি স্টলগুলোতে ছিল নানা রকম শিশুদের ব্যবহার্য সামগ্রী এবং দৈনন্দিন ঘরের সরঞ্জাম।
অন্যদিকে, সারাদিনই চলেছে শিশুদের আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শেষ দিন আয়োজন করা হয়েছিলো “তোমার চোখে খেলনা” শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা। প্রতিদিন বেড়িয়েছে একটি করে বুলেটিন যেখানে শিশুদের বর্তমান কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছিল এবং সম্পাদনায়ও থেকেছে শিশুরাই।
মেলার সাতদিনই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদেরকে নিয়ে “আমার কথা শোনো” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সদস্যরা জানায়, দেশে ছোটোখাটো কয়েকটি আঞ্চলিক পুতুল মেলা হলেও, জাতীয় উদ্যোগে এত বড় পুতুল মেলা এই প্রথম তাই আয়োজনটাও ছিল ভিন্ন। ছোটো শিশু এবং খেলনা যাদের পেশা, তাদের জন্য এমন কয়েকটি মেলার আয়োজন হচ্ছে স্বপ্ন এবং শিল্পের প্রকৃত মূল্যায়ন।