যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনের তান্ডবে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতুনি ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। যমুনা নদীর পানি বন্যা পরবর্তী সময়ে অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করায় এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
তারা আরো জানায়, বিগত বছরের চেয়ে এবার যমুনা নদীতে পানি কমে যাওয়ার মাত্রা অনেক বেশি। ফলে এ বছর যমুনা নদীতে মাছের উৎপাদনও অনেক কমে গেছে। অপরদিকে ভাঙ্গনের তান্ডব শুরু হওয়ায় প্রতিদিনই ১০/১২টি করে বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলি জমি যমুনার পেটে চলে যাচ্ছে। এতে গত ১ মাসে এ এলাকার শত শত মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসে গেছে। এ সব ছিন্নমূল মানুষের যাওয়ার জায়গা না থাকায় তারা অন্যের জমিতে ঝুঁপড়ি তুলে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। অনেকে আবার ভাঙ্গনের হাত থেকে ঘরদোর রক্ষা করতে আগে থেকেই তাদের ঘরবাড়ি ভাঙ্গন এলাকা থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।
শ্রীপুর গ্রামের সানবীম কিন্ডার গার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীর ভাঙ্গন যে হারে শুরু হয়েছে তাতে এ মাসের মধ্যে তার স্কুলটি এখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে না পাড়লে নদীগর্ভে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তিনি তার স্কুলটি নিয়ে রড়ই চিন্তায় পড়েছেন। ধীতপুর গ্রামের আলমাস মন্ডল, রীনা খাতুন ও হাজেরা খাতুন জানান, ভাঙ্গনের ভয়ে তারা চরম আতংকে রয়েছেন। অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য জায়গা খুঁজতে শুরু করেছেন।
সোনাতুনি গ্রামের জিয়াউল হক, এরশাদ আলী ও ছোট চানতাঁরা গ্রামের সোলায়মান হোসেন জানান, ভাঙ্গনের তান্ডবে রাতে তারা ভাল ভাবে ঘুমাতে পারেন না। মনের মধ্যে সব সময় ভয় ও আতংক বিরাজ করে। তারা এ ভাঙ্গণ রোধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে সোনাতুনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বলেন, ভাঙ্গনের বিষয়ে প্রশাসনকে বহুবার বলেছি কাজ হয় নাই। তিনবার ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করেছি। কোন প্রকার সহায়তা পাওয়া যায়নি। তাই বলা বাদ দিয়েছি। তাদের বলে কোন কাজ হয় না।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসাইন খান বলেন, ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে কিছুদিন আগে শুষ্ক খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এটি শেষ হলে তালিকা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।