Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৫ বুধবার, মে ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্কুলপ্যান্ট পরে না যাওয়া শিক্ষকের থাপ্পড়ে হাসপাতালে ছাত্র

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:৪০ PM
আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:৪১ PM

bdmorning Image Preview


স্কুলপ্যান্ট পরে না যাওয়ায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের থাপ্পড়ে মমিনুল ইসলাম (১৪) নামে এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মমিনুলকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মমিনুল উপজেলার বাউরা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সে বাউড়া ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের ভ্যানচালক রেজাউল ইসলামের ছেলে।

ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা জানায়, শুক্রবার (১২ অক্টোবর) আকাশ মেঘলা থাকায় পরিষ্কার করে নেড়ে দেওয়া স্কুলশার্টটি শুকালেও প্যান্টটি শুকায় নি। তাই শনিবার স্কুলশাটের সঙ্গে ভিন্ন রঙের প্যান্ট পরে স্কুলে যায় মমিনুল। বিষয়টি জানতে পেরে মমিনুলকে অফিসকক্ষে ডেকে নেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজার রহমান। পরে ভিন্ন রঙের প্যান্ট পরে বিদ্যালয়ে আসার জন্য তাকে চর-থাপ্পড় মারেন প্রধান শিক্ষক। দ্বিতীয় বারে থাপ্পড় মারায় বিদ্যালয় ভবনে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে যায় মমিনুল। এতে কপালে আঘাত পেয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার। আহত মমিনুলকে উদ্ধার করে প্রথমে বাউরা কমিউনিটি হাসপাতাল পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

মমিনুলের বাবা রেজাউল জানান, ভ্যান চালিয়ে কোনো রকম তিন ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালান তিনি। কষ্টের সংসারে একটি ড্রেসেই স্কুল করে তার সন্তানরা। শুক্রবার আকাশে রোদ না থাকায় মমিনুলের স্কুলের প্যান্টটি শুকায় নি। তাই স্কুল শাটের সঙ্গে অন্য রঙের প্যান্ট পড়ে যাওয়ায় ছেলের এ অবস্থা করেছেন প্রধান শিক্ষক  আজিজার রহমান।

না প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, ছোট বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণ কাম্য নয়। তবে মমিনুল থাপ্পড়ের কারণে দেয়ালে ধাক্কা লেগে কপালে আঘাত পেয়েছে।

পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুস সালাম বলেন, আহত শিক্ষার্থী মমিনুলের কপালে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। মাথা ও কানে আঘাত পাওয়ায় তাকে এখন পর্যন্ত আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। 

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজার রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি।

হাসপাতালে আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে আসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মুরাদ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের কোনো অবস্থায় মারধর করা যাবে না। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাটগ্রাম উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, এ ব্যাপারে ওই প্রধান শিক্ষককে তিরস্কার করা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Bootstrap Image Preview