Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অনুপস্থিত থেকে স্বাক্ষর করায় অধ্যক্ষর হাজিরা খাতা কেড়ে নিল প্রভাষক

মোঃ মিঠুন মাহমুদ, জীবননগর(চুয়াডাঙ্গা)প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৪:২৪ PM
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৪:২৪ PM

bdmorning Image Preview


জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষর হাতে থেকে জোরপূর্বক হাজিরা খাতা কেড়ে নিয়ে বাকি শিক্ষকদের সাক্ষর করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে একই কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক জাকিয়ার বিরুদ্ধে।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার সময় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে একটি বাকবিতন্ডা সৃষ্ঠি হয়। অবশেষে কলেজে পরিদর্শন ও অশান্ত পরিবেশ শান্ত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজা।

কলেজের শিক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার সময় প্রভাষক জাকিয়া কলেজের প্রিন্সিপালের অফিস রুমে ঢুকে হাজিরা খাতায় সাক্ষর করে খাতা নিতে চায় এ সময় প্রিন্সিপাল খাতা তার হাতে দিতে অপরাগত জানালে সে প্রিন্সিপালের সাথে খারাপ আচরণ করে। এক পর্যায় প্রিন্সিপালের নিকট থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নিজের ব্যাগের ভিতরে রাখে এবং সে আর অন্য শিক্ষকদের হাজিরা খাতায় সাক্ষর করতে দিবে না বলে জানায়। এক পর্যায় শিক্ষকরা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি বললে ঘটনা স্থানে তিনি ছুটে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আলাউদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার কলেজের সকল শিক্ষকদের নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সমাধীতে পুস্মমাল্য অর্পণ করতে সকাল ৭টার সময় যাওয়ার কথা সকল শিক্ষক আসলেও জাকিয়া দেরি করে আসে তাকে ফোন দিলে তার কোন মতামত পাওয়া যায়নি অবশেষে সকল শিক্ষকের কথামত গাড়ি ছেড়ে দিতে হয়। সেই রাগেই হয়ত আজ সকালে আমার রুমে ঢুকে হাজিরা খাতায় সে সাক্ষর করে খাতাটি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমি তাকে হাজিরা দিতে অপরাগত জানালে সে আমার কাছ থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নিয়ে চলে যায়।

প্রভাষক জাকিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হাজিরা খাতায় নিয়ে গেছি একটাই কারণ এখানে অনেক শিক্ষক আছে যারা তিন দিন কলেজে অনুপস্থিত তারা কলেজে এসে একবারে সাক্ষর করে তা ছাড়া এই কলেজের অনেক শিক্ষক আছে যারা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ চাকরি করে। আবার এই কলেজেও চাকরি করে শুধু তাই নয় অনেকেই কলেজে দেরি করে আসে বিষয়টি অনেকবার প্রিন্সিপালকে বলেছি তিনি কোন কথায় কান না দিয়ে এ ধরনের অনিয়ন করে চলেছে যার কারণে আমি বাধ্য হয়ে হাজিরা খাতা প্রিন্সিপালের নিকট থেকে  নিয়েছি।

জানা গেছে, জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজটি ২০০০ সালে স্থাপিত হয়। স্থাপিতর পর থেকে কলেজটি খুব সুনামের সহিত পরিচালিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা -২ আসনের সংসদ হাজী আলী আজগার টগর (এমপির) একান্ত প্রচেষ্ঠায় বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রতিতে জীবননগর আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকেই জীবননগর  সরকারী আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগে এক  শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে অসাধচারণ আবার দিন যেতে না যেতেই  প্রভাষকের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষর সাথে অসাধচরনের অভিযোগ।

এ ছাড়াও শিক্ষকদের অনুপস্থিত আর নামমাত্র জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজে চাকরি একই সাথে বিভিন্ন স্কুল কলেজে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে মনজুরা খাতুন, নাজমুননাহার,সাইফুল ইসলাম ও মাসুদ হাসানের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় কলেজের অনেক শিক্ষক আছে যারা নিয়মিত কলেজে না এসেও তাদের হাজিরা খাতায় হাজিরা উঠে যায়। এযেন হ-য-ব-র-ল অবস্থা।এদিকে শিক্ষকদের এ আচারনে অভিভাবক মহল ক্ষুদ্ধ।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজার সাথে কথা বললে তিনি বলেন জীবননগর সরকারী আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষর নিকট থেকে হাজিরা খাতা নেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি সেখানে যেয়ে যেটি জানতে পারলাম শিক্ষকদের মধ্যে হয়ত যে কোন মতদন্ধ থাকতে পারে যার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে । তা ছাড়া আমি যতটুকু জানতে পারলাম এই কলেজের বেশ কিছু  শিক্ষক অন্য স্থানে চাকরি করে এবং কিছু শিক্ষক কলেজে না আসলেও হাজিরা খাতায় তাদের হাজিরা উঠে যায়। আমি প্রিন্সিপালকে এ বিষয়টির বিষয়ে সতর্ক করেছি এবং যে শিক্ষক অন্য স্থানে চাকরি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।

এদিকে প্রভাষকের এ ধরনের আচারণে এলাকার সুধী মহল সহ অভিভাবক মহল হতাশ।   

Bootstrap Image Preview