Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঢাবিতে গাউন পরিয়ে স্যালুট করা সেই ছবিটি আসলে বাবা-ছেলের নয়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:৫০ PM
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:৫১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


এক রিকশাচালককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের গাউন পরিয়ে স্যালুট দিয়ে উঠানো যে ছবিটি বাবা-ছেলে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে সেই তথ্য আসলে সত্য না। আসলে ওই রিকশাচালক আর যিনি নিজের গাউন পরিয়ে স্যালুট দিচ্ছেন তারা বাব-ছেলে নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম লিটন মুস্তাফিজ।

জানা গেছে, সমাবর্তনে বন্ধুরা মিলে ছবি তুলছিলেন। এমন সময় হঠাৎ পাশে রিকশাওয়ালার মায়াবী চোখে তাকানো দেখে এগিয়ে গিয়ে তার গায়ে নিজের গাউন পরিয়ে দেন লিটন মুস্তাফিজ। এ সময় কয়েকটি ছবি তোলা হয়। ভাইরাল কিংবা বাহবা পাওয়ার জন্য ছবি তুলনেও ওই ফটোগ্রাফার ছবিটি ফেসবুকে রাতে আপলোড করেন। এরপরই সবাই ছবিটি শেয়ার দিতে থাকনে।

এ বিষয়ে লিটন মুস্তাফিজ বলেন, আমার বাবাও একজন কৃষক। শ্রমজীবীদের কষ্ট আমাকে নাড়া দেয়। তাদের প্রতি আমার বিশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে। যিনি ছবি তুলেছিলেন তার পেজে পোস্ট দেওয়ার পর মুহূর্তেই তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবি নিয়ে যখন বিতর্ক সৃষ্টি হয় তখন আমি ফেসবুকে আমার বক্তব্য তুলে ধরি।

ফেসবুকে লিটনের এই ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর স্যালুট দেয়া সেই ছবিটি নিজের ফেসুবকে আপলোড করে তিনি একটি পোস্ট দেন। লিটন মোস্তাফিজের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো :

স্যালুট...
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম সমাবর্তনে এ ছবির একটি বিশেষ অংশ গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছবির ঐ অংশটি সম্ভবত বিভিন্ন গ্রুপ হয়ে ব্যক্তি থেকে আরম্ভ করে জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ফটোগ্রাফার শাহরিয়ার সোহাগ গতকাল অপরাজেয় বাংলার সামনে থেকে এ ছবিটি তোলেন। রিকশায় যিনি বসে আছেন তিনি আমাদের গর্বিত একটি অংশ। মনেই হয়নি সে মুহূর্তে তিনি অন্য একটি অংশ। পৃথিবীর আর সব বাবার মতো এ বাবার চোখেও আমি স্বপ্ন খুঁজে পাই। মোটেও মনে হয় নি তার গায়ের ঘাম লাগলে দুর্গন্ধী হয়ে উঠবে আমার গাউন। এমন ঘামের চর্মশরীরে বেড়ে ওঠা আমার। আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীর চাকা এ 'পিতা'দের ঘামে ও দমে ঘোরে।

আমরা যখন খুব আনন্দ করছিলাম তখন তিনি আনমনা নজরে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। বিষয়টি আমি বুঝে 'পিতা'কে ডাক দেয়। তিনি সাড়া দেন। আমি আমার গাউন, হুড খুলে 'পিতা'কে পরিয়ে দেই। তারপর ছবি তোলা হয়। একজন গর্বিত গ্রাজুয়েট মনে হচ্ছিলো তখন আমার। এঁদের রক্ত ঘামানো অর্থেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পেরেছি। এ 'পিতা'র পোশাক দেখে স্যালুট না করে পারিনি। এ ছবি তুলে রাতেই ফেইসবুকে পোস্ট করেন ফটোগ্রাফার। ছবিটি ভাইরাল হলে দেখা যায় অনেকেই আমাকে ভুল বুঝছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবিটি নিউজ হয়ে গেছে। দুঃখিত আমি যে মুখ ঘোলা করার জন্য তবুও বলি, এসব মানুষের মাথা খালি বলেই আমাদের মাথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হুড! যাঁরা ভুল বুঝেছেন আমি তাঁদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি ফটোগ্রাফারের হয়ে। এসব মানুষেরা আমাদের সত্যিকার বাবা-ই। কারণ আমি নিজেও কৃষকের লাঙলের ফালা বেয়ে উঠে এসেছি..

Bootstrap Image Preview