হবিগঞ্জে ৩ দিনব্যাপী ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই মেলার উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের স্বপ্ন সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলব ইনশাল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, এবারের উন্নয়ন মেলাকে তরুণদের উদ্দেশ্যে উৎস্বর্গ করা হয়েছে। এই উন্নয়ন মেলা থেকে শিক্ষা নিয়ে তরুণেরা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার করার পাশাপাশি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই দেশের একটি মানুষ ও দরিদ্র থাকবে না। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে তার সরকার। এ সময় তিনি বিভিন্ন জেলায় উপকারভোগীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন।
এর আগে সকাল ৯টায় হবিগঞ্জ কালেক্টরেট ভবনের নিমতলা মেলা প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্র বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে একটি হাতি সহকারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্যান্ডপার্টি নিয়ে অংশ নেয়।
শোভাযাত্রায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইতি রাণী পোদ্দার, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কুদ্দুছ আলী সরকার, সিভিল সার্জন ডাঃ সুচিন্ত চৌধুরীসহ সরকারি কর্মকর্তা, ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের উন্নয়ন মেলায় ৯৫টি স্টল তৈরি করা হয়েছে। এর মাঝে সরকারি প্রতিষ্ঠান ৭৫টি এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে ১৮টি।
২৮টি স্টলে সরাসরি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর মাঝে রয়েছে অন লাইনে নামজারী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ই-সেবার আবেদন গ্রহণ, পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ, আয়কর রিটার্ন দাখিল এবং ইটিআইএন খোলা, স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা সেবা প্রদান, বিদ্যুতে সংযোগ প্রদানসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা।
নিরাপত্তার জন্য মেলায় রয়েছে সিসিটিভি। এখানে সবাই ফ্রি ওয়াই ফাইর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন।
মেলায় আইসিটি সমাবেশ ছাড়াও প্রতিদিন আলোচনা সভা থাকবে।
আলোচনা সভায় জেলার বিশিষ্ট আলোচকরা অংশ নিবেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পর্যায়ক্রমে মেলা পরিদর্শন করবেন এবং তাদের জন্য থাকবে কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেলায় জাতীয় পর্যায়ের ও স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। তবে হবিগঞ্জের লোকজ সংস্কৃতি তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে এই সকল অনুষ্ঠানে। মেলার সমাপনী দিনে আশিক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।
মেলায় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধ নামে একটি কর্ণার রয়েছে। সেখান থেকে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হচ্ছে। মেলায় ব্যাংকের বুথ থাকবে। যার ফলে সহজেই আয়করের রিটার্ন দাখিল করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ জানান, মেলায় প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার লোকের সমাগম হবে বলে প্রত্যাশা করছি। প্রতিকূল আবহাওয়া এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিষয়টি মাথায় রেখে বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্টলগুলোতে টিনের ব্যবহার এর ফলে বৃষ্টিতে বড় ধরনের কোন সমস্যা হবে না।
তিনি আরও জানান, উন্নয়ন মেলায় বিগত ১০ বছরে জেলায় কোন বিভাগ কি কাজ করেছে তার একটি স্পষ্ট ধারণা প্রদান করা হবে।