Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল : মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৬ PM
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলে সরকারি কমিটি যে সুপারিশ করেছে, তা আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন করেছে।প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের কমিটি ৯ম থেকে ১৩ তম গ্রেডে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) কোনো কোটা না রাখার সুপারিশ করে গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। কমিটি এসব পদে সরাসরি মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করেছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে ৮ এপ্রিল শাহবাগে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। শুরু থেকেই শিক্ষার্থীরা অবশ্য বলছেন, কোটা একেবারে বাতিল হোক, সেটা তাঁরাও কখনো চাননি। তাঁরা চান কোটার যৌক্তিক সংস্কার করে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি। আবার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সংগঠন এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন তাদের বিদ্যমান কোটা বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

'বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদ' এর ব্যানারে পাঁচটি বিষয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। সেগুলো হলো-

•কোটা-ব্যবস্থা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা (আন্দোলনকারীরা বলছেন ৫৬% কোটার মধ্যে ৩০ শতাংশই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ। সেটিকে ১০% এ নামিয়ে আনতে হবে)

•কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া

•সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়স-সীমা- ( মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে চাকরীর বয়স-সীমা ৩২ কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০। সেখানে অভিন্ন বয়স-সীমার দাবি আন্দোলনরতদের।)

•কোটায় কোনও ধরনের বিশেষ পরীক্ষা নেয়া, যাবে না ( কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাকরি আবেদনই করতে পারেন না কেবল কোটায় অন্তর্ভুক্তরা পারে)

•চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার করা যাবে না।

প্রথম শ্রেণির চাকরি শুরু হয় নবম গ্রেড দিয়ে। এর ওপরের পদগুলো সাধারণত পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ হয়। আর দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি ১০ম গ্রেড থেকে ১৩ তম গ্রেডের মধ্যে। ব্যতিক্রম ছাড়া শুরুর পদেই নিয়োগ হয় এবং সেখানেই কোটা নির্ধারণ হয়।

সরকারি সূত্রমতে, সরকারি কমিটি কোটা নিয়ে দীর্ঘ পর্যালোচনা করে তাদের প্রতিবেদনটি তৈরি করে। ওই প্রতিবেদনে গত ১০টি বিসিএসের তথ্য তুলে ধরা হয়। তথ্য বিশ্লেষণে কমিটি দেখতে পায়, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, নারী কোটায় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় ১ দশমিক ১৭ শতাংশ প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। আর বিদ্যমান ৩০ শতাংশ কোটা সংস্কার বা বাতিল করার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে কি না, সে বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে মতামত চাওয়া হলে তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধা কোটা কমানো বা বাড়ানো রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ার। এ-সংক্রান্ত মামলার লিভ টু আপিলের রায় কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না।

বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে নির্বাহী আদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি চালু করা হয়। বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৪৫ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। বাকি ৫৫ শতাংশ পদে নিয়োগ করা হয় অগ্রাধিকার কোটায়। অগ্রাধিকার কোটার মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা (পরে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, এখন নাতিনাতনি) কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা। সর্বশেষ ২০১২ সালে বিদ্যমান অগ্রাধিকার কোটায় কাঙ্ক্ষিত যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেই কোটা থেকে ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়। এর বাইরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে পোষ্য, আনসার-ভিডিপিসহ আরও কিছু কোটা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার (০৩ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে কোটা পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোটা থাকবে না

Bootstrap Image Preview