বগুড়ার ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতের আদেশ অমান্য করার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালের হাকিম তাকে কারাগারে পাঠান।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধুনট উপজেলার চালাপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ শেখের মেয়ে বন্যা খাতুনের একই উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের বাঁশপাতা গ্রামের আব্দুস সামদ মন্ডলের ছেলে শাহ আলীর সাথে বিয়ে হয়। সেখানে ঘর সংসার চলাকালে ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর শাহ আলী যৌতুকের দাবিতে বন্যা খাতুনকে পিটিয়ে আহত করেন। এই ঘটনায় বন্যা খাতুন বাদি হয়ে তার স্বামী শাহ আলী ও শ্বশুর আব্দুস সামাদ মন্ডলকে আসামি করে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল-২ এর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক আব্দুর রহিম এই মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গোপাল নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা গোলাম হোসেন সরকারের প্রতি আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকার আদালতের আদেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে ব্যর্থ হন।
ফলে চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকারকে সশরীরে হাজির হয়ে ওই মামলার প্রতিবেদন দাখিল করতে আবারো একটি আদেশ জারি করেন বিচারক। এর পরেও চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে ব্যর্থ হওযায় তাঁর বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকার আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বাদিনিকে যৌতুকের দাবিতে মারপিটের বিষয়ে ঘটনা মিথ্যা প্রমাণিত করে আসামিদের মামলা থেকে অব্যহতির সুপারিশ করা হয়।
ফলে আদালতের বিচারক ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে আদালত অমান্য করার অভিযোগে চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকারকে কারাগারে পাঠান।
বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে আদালতের জামিনের আবেদন করেন চেয়ারম্যানের আইনজীবি। কিন্ত চেয়ারম্যানের পক্ষে জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেন বিচারক।
এ বিষয়ে গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাফিজার রহমান বলেন, পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
একারণে আদালতের আদেশ অমান্য করার অভিযোগে চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।