জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের তিন চতুতাংশ মানুষসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় অর্ধেক মানুষ জীবন যাত্রার মান হারানোর ঝুঁকিতে আছে। ‘দক্ষিণ এশিয়ার উষ্ণতা: ‘জীবনযাত্রার মানের ওপর বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন ও তাপমাত্রার প্রভাব’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করেছে বিশ্বব্যাংক।
আজ বুধবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৬০ বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার তামমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। যেটা কৃষি, স্বাস্থ্য ও উৎপাদনের ওপর প্রভাব ফেলবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে প্রবৃদ্ধির ৬.৭ শতাংশ। আর দেশের তিন চতুতাংশ মানুষের জীবনযাত্রা মানের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী যদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয় তাহলে তাহলে বার্ষিক তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যথায় দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে যেতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হারটিং সেফারও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং দারিদ্র বিমোচনের পথে জলাবায়ু পরিবর্তন একটা বড় হুমকি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরবর্তী দশকে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ অভ্যান্তরীণ এলাকা মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়বে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কৃষি খাতের বাইরে কাজের সুযোগ তৈরি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন কমাতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সাহায্য করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এরমধ্যে কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামে জীবনযাত্রার মান ১৮ শতাংশ কমে যাবে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ মুথুরা মানি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের মাথা পিছু খরচের পরিমাণ বাড়বে যেটা দরিদ্রতা একং অসমতা তৈরি করবে।উঞ্চায়ন জায়গাগুলো নির্ধারণ হওয়ার ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এবং ঝুঁকি কমাতে নীতি নির্ধারকদের সাহায্য করবে ।’
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্তমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর কিউমিও ফান, সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক ড. সুলতান আহমেদ, বিশ্ব ব্যাংকের আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট হাডিন শেফার প্রমুখ।