Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পৌর এলাকার ৯৫ কি.মি. রাস্তার মধ্যে ৫২ কি.মি. রাস্তাই ক্ষতিগ্রস্থ

ফরহাদ আকন্দ, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:২২ AM
আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:২২ AM

bdmorning Image Preview


দীর্ঘদিন থেকে মেরামতের অভাবে গাইবান্ধা পৌর এলাকার ৯৫ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ৫২ কিলোমিটার রাস্তাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভাল রাস্তা আছে মাত্র ৪৩ কিলোমিটার। ফলে এসব রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে লক্ষাধিক মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, অসুস্থ রোগী ও গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে স্বজনরা পড়েন বিপাকে। 

এ ছাড়া অন্ধকার রাত্রিতে মানুষদের হতে হয় নান ধরণের ভোগান্তির শিকার। তাই এসব রাস্তা মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা। 

গাইবান্ধা পৌরসভা কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, ১৯২৩ সালে স্থাপিত গাইবান্ধা পৌরসভা ক-শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয় ২০০২ সালে। পৌর এলাকায় রাস্তা রয়েছে ৯৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে কার্পেটিং (বিসি) ৫০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ভাল ২৩ কিলোমিটার, এইচবিবি ৭ কিলোমিটারের মধ্যে ভাল ৪ কিলোমিটার, সলিং ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ভাল ৬ কিলোমিটার, সিসি/আরসিসি ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ভাল ৮ কিলোমিটার ও ডব্লিউবিএম ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ভাল রাস্তা রয়েছে ২ কিলোমিটার এবং ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা রয়েছে ৫২ কিলোমিটার। 

সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাগুলো ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার কার্পেটিং (পিচ) উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকে বৃষ্টির পানি। দুইপাশের মাটি উঁচু থাকার কারণেও দীর্ঘ সময় রাস্তার উপর পানি জমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। অথচ দীর্ঘদিন থেকে এসব রাস্তাগুলো মেরামত করা হচ্ছে না। 

ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাগুলো হচ্ছে, জেলা সদর হাসপাতাল রোড, কাচারী বাজার প্রেসক্লাব রোড, সরকারি কলেজের পূর্বপাশের রাস্তা, গোরস্থান মোড় থেকে এসকেএস হাসপাতাল রোড, কাঠপট্টি স্টেশন রোড, স্টেডিয়াম রোড, মাস্টারপাড়া পানির ট্যাংকির সামনের রাস্তা, জেলা পরিষদের ডাক-বাংলোর পশ্চিম পাশের রাস্তা, খানকাহশরীফ-বটতলা-সুখশান্তির বাজার রোড, দক্ষিণ ধানঘড়ায় এলজিইডির মোড় থেকে এয়ারটেল টাওয়ার হয়ে সুন্দরজাহান মোড়, শাপলা পাড়া সেবা ক্লিনিক রোড, জুম্মাপাড়া তিন রাস্তার মোড় থেকে মিতালী বাজার মোড়, পলাশপাড়া স্কুল রোড, পশ্চিমপাড়া আহলে হাদীস জামে মসজিদ রোড, শনি মন্দির রোড, ব্রীজরোড কালীবাড়ী পাড়া ও পিকে বিশ্বাস রোডসহ আরো বেশ কয়েকটি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব রাস্তা দিয়ে চলাচলের কারণে প্রতিদিন লক্ষাধীক মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। 

এসব রাস্তার কার্পেটিং (পিচ) উঠে যাওয়ায় যাতায়াতে সময় বেশি লাগছে। কার্পেটিং ওঠা স্থানে সৃষ্ট গর্তের কারণে রিকসা-ভ্যান ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় মেরামত করতে গিয়ে চালক ও মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। বিশেষ করে রাস্তার বেহাল দশার কারণে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, অসুস্থ্য রোগী ও গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে স্বজনরা পড়েন চরম বিপাকে। তখন খুব কষ্ট পেতে হয় সবাইকে। 

এ ছাড়া অন্ধকার রাত্রিতে এসব রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে মানুষদের। গত ঈদুল ফিতরের ঈদের আগে পৌর এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ইটের টুকরা দিয়ে মেরামত করা হলেও পরে বৃষ্টিতে অধিকাংশ রাস্তাই আবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাই পৌরবাসীর কষ্ট লাঘবে রাস্তাগুলো অতিশীঘ্রই মেরামত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। 

পৌরসভার কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফারুক মিয়া বলেন, সরকারি কলেজের পূর্বপাশের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করতে হয়। কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আমাদের। এ ছাড়া রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় বেশি টাকা রিক্সা ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। 

গাইবান্ধা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পৌরএলাকার ৬০ শতাংশ রাস্তারই বেহাল দশা। আপাতত রাস্তা কার্পেটিং বা মেরামতের কোনো কাজ নেই। জলবায়ুর একটি প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়নে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা মেরামতের জন্য কয়েকটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন বলেন, এসব ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা পাকাকরণ ও মেরামত করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। দু-একটি প্রকল্প পাশ হয়েছে। সেগুলো ঈদের পরে কাজ শুরু করা হবে।

Bootstrap Image Preview