নওগাঁর স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ এর ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে নওগাঁ ছোট যমুনা নদীতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা দেখতে নদীর দু’কুলে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে।
নওগাঁ শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনা নদী। শহরের খলিশাকুড়ি খেয়া ঘাট থেকে লিটন ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ো নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। নৌকা বাইচ দেখতে নদীর দু’কুলে বিভিন্ন বয়সি হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশুদের সমাগম ঘটে। নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদী তীরে বসে এক গ্রামীন মেলা। দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনে খুশি শহরবাসী ও আগত বিনোদনপ্রেমীরা।
প্রতিযোগীতায় বিভিন্ন এলাকার ৬টি দল অংশ নেয়। প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে পেরে খুশি প্রতিযোগীরাও।
প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগারী গ্রামের আলেফ মোল্লার নৌকা, দ্বিতীয় শৈলগাছী গ্রামের মহসিন আলীর নৌকা এবং তৃতীয় হয়েছেন মাখনা গ্রামের মোজাম্মেল হকের নৌকা। প্রায় হারিয়ে যাওয়া এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা নিয়মিত আয়োজনের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে সুস্থধারার সংস্কৃতগুলো ধরে রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নৌকা বাইচে প্রধান অতিথি ছিলেন, নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো: মিজানুর রহমান। শান্তির পায়রা উড়িয়ে নৌকা বাইচের উদ্বোধন করেন, নওগাঁ পুলিশ সুপার মো: ইকবাল হোসেন।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি-১৬ লে. কর্ণেল খাদিমুল বাশার, পরিষদের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য ওহিদুর রহমান, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, ডাক্তার ময়নুল হক, বিন আলী পিন্টু, রফিকুদ্দৌলা রাব্বি, মনোয়ার হোসেন লিটন, নাইচ পারভিন, বিষ্ণ কুমার দেবনাথ, সাধারন সম্পাদক এমএম রাসেল, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কায়েস উদ্দিন সহ গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পরিষদের সাধারন সম্পাদক এমএম রাসেল বলেন, আমরা গত ২৫ বছর থেকে বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন নিয়ে কাজ করছি। ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। এরমধ্যে- নৌকা বাইচ, পানিতে ডুব প্রদর্শনী, আর্ট ক্যাম্প, লাঠি খেলা, আলকাপের গান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ব্রতচারী নৃত্যসহ নানান আয়োজন।
পরিষদের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল বারী বলেন, এক সময় জেলার দিঘলীয় ও গুটার বিলে নৌকা বাইচ খেলা হতো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বিল ও নদীগুলো এখন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পানিও তেমন নেই। ফলে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। নৌকা বাইচের মাধ্যমে প্রাচীন ও বাঙ্গালীর এ খেলাকে সামনে নিয়ে আসতে কাজ করছি।
নওগাঁ পুলিশ সুপার মো: ইকবাল হোসেন বলেন, গ্রাম বাংলার অনেক পুরনো একটি সাংস্কৃতিক হলো নৌকা বাইচ। বিনোদনের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে নৌকাবাইচ একটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। এ আয়োজনগুলো আমাদের উজ্জিবিত করে। এমন সুন্দর একটি আয়োজনের জন্য একুশে পরিষদের সাথে সম্পৃক্তদের ধন্যবাদ জানাই।