Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১১ শনিবার, মে ২০২৪ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে সারাদেশে গণ-অনশনে বসছে বিএনপি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২১, ০৬:০০ PM
আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২১, ০৬:০০ PM

bdmorning Image Preview


বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিয়ে যাওয়ার দাবিতে অনশনে বসার ডাক দিয়েছে দলটি। শনিবার রাজধানীসহ সারা দেশে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনশনে বসবেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হবে না, এটা অমানবিক। আমরা অনতিবিলম্বে তার জীবন রক্ষার জন্য, বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের ব্যবস্থা করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে আগামী ২০ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সারা দেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে গণ-অনশন পালনে আমি সবাইকে আহবান জানাচ্ছি।

‘আমাদের ঢাকায় যে কর্মসূচি সেটি ভেন্যু পাওয়া সাপেক্ষে, যদি ভালো ভেন্যু পাই তবে সেখানে হবে; কোথাও যদি ভেন্যু না পাই তবে আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করব।’

১৩ নভেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে এভারকেয়ারে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরের দিন ভোরে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।

খালেদার অবস্থা ভালো নয় বলে বিএনপি থেকে জানানো হয়েছে। মানবিক স্বার্থে হলেও দলীয় প্রধানকে বিদেশ নিয়ে যেতে সরকারের অনুমতি চেয়েছেন তারা। বিদেশ পাঠিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জীবন বাঁচাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তবে এ বিষয়ে সরকার থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া যাচ্ছে না। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কয়েকবারই বলেছেন, খালেদা জিয়ার করা আবেদনটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী আগেই নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়ার আইনি কোনো সুযোগ নেই।

বিষয়টি জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার আবারও বলেছেন আইনমন্ত্রী। বলেছেন, ৪০১ ধারায় নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া বিষয় নিয়ে পুনরায় বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের আইনের বইয়ে এটা নেই।

তিনি বলেন, ‘ওনারা যদি আমাকে দেখাতে পারেন, আমি তো দেখিয়েছি, বাংলাদেশের আইনের বইয়ে এটা নেই। ওনারা যদি দেখাতে পারেন, আমরা তো বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু এটা আইনের বইয়ে নাই, ওনারাও দেখাতে পারবেন না, বিবেচনার প্রশ্নই আসে না।’

বিএনপি চেয়ারপারসনকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে সুযোগ না দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে চান কীভাবে বলেন তো? খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বাসায় থাকতে দিয়েছি, চিকিৎসা করতে দিয়েছি, এটাই কি বেশি না?’

তিনি বলেন, ‘আপনাকে কেউ যদি হত্যা করার চেষ্টা করত, আপনি তাকে গলায় ফুলের মালা দিয়ে নিয়ে আসতেন? বলেন আমাকে?’

নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করিয়ে বাড়ি ফেরার সুযোগ করে দেয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরেও আমরা অমানুষ না। অমানুষ না দেখেই তাকে আমরা অন্তত তার বাসায় থাকার ব্যবস্থাটুকু… এক্সিকিউটিভ অথরিটি আমার হাতে যতটুকু আছে, সেটুকু দিয়ে তাকে বাসায় থাকার, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আর বাকিটা আইনগত ব্যাপার।’

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি এমন একটি পর্যায়ে রয়েছেন, যেখানে সুচিকিৎসা না হলে এমন অবস্থায় চলে যাবেন যে আর কোনো চিকিৎসা দিয়েই লাভ হবে না বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন এর আগে কারোনা পরবর্তী জটিলতায় ৫৪ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পাঁচ বেগ রক্ত নিয়েছিলেন… উনার এই বয়সে এরকম কিছু ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেই অবস্থা থেকে বের করে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। গত ১২ অক্টোবর নতুন উপসর্গ নিয়ে তিনি আবার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং তার একটি বায়োপসি করা হয়।

‘বাসায় চিকিৎসাকালীন আবার ১৩ নভেম্বর পুনরায় হাসপাতালে নেয়া হয়। দ্রুত ভর্তির সঙ্গে সঙ্গে রক্ত দানের পাশাপাশি একটি এন্ডোস কপি করা হয়। বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়েও কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই দেশে যা যা চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে সবটাই করা হয়েছে এবং হচ্ছে।’

খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেয়ার বিকল্প নেই জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘অতি দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া প্রয়োজন। এটা আমাদের মেডিক্যাল বোর্ডে যারা রয়েছেন তারা বারবার বলে আসছেন এবং স্পষ্ট করে আমাদের বলেছেন ম্যাডাম এই মুহূর্তে এমন একটি অবস্থায় রয়েছেন, যেখানে সময় উপযোগী সুচিকিৎসা না পেলে এমন একটা পরিস্থিতিতে চলে যাবেন, তখন কোনো চিকিৎসা আর কাজে দেবে না।’

Bootstrap Image Preview