গণধর্ষণের পর কিশোরী সিমা আক্তারকে হত্যার ঘটনায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় একটি মামলা করা হয়েছে।
শনিবার (জানুয়ারি) রাতে রাঙ্গাবালী থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়।
ওইদিন রাতেই মামলার আসামি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নবী-নূর রহমানকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানায়, ১৩ বছর বয়সী কিশোরী সিমার বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের সামুদাবাদ গ্রামে। সে রাঙ্গাবালী হামিদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। গত বছরের ২৪ অক্টোবর নিজ বাড়িতে সিমা গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন। এ ঘটনায় তিন মাস পর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারী পটুয়াখালী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশি অভিযোগ করা হয়। সিমার মা তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।
ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন সকাল ৮ টায় বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ে সিমাকে ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়া শব্দ পাননি। পরে ঘরের মধ্যে ঢুকে তার মেয়ের মৃত দেহ দেখতে পান। তখন তার গলায় অনেক বড় ক্ষত ও শরীরের জামা কাপড় এলোমেলো থাকায় প্রমাণ হয় যে, তার মেয়েকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, একটি ধর্ষণ মামলায় তিনি স্বাক্ষী হওয়ায় আসামীদের সঙ্গে পূর্ব বিরোধ ছিল। ক্ষিপ্ত আসামীরা এ ঘটনার আগে তার মেয়েকেও ধর্ষণের হুমকি দিয়েছিল।
অভিযোগটি ট্রাইব্যুনাল আমলে নিয়ে রাঙ্গাবালী থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক মামলা দায়ের করার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়ে শনিবার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হল- সুমন চৌকিদার, দানেশ চৌকিদার, সেরাজুল চৌকিদার, নবীনূর রহমান, ছাদের চৌকিদার, ইমরান চৌকিদার, রাকিব চৌকিদার ও মোফা। তাদের মধ্যে শুধু মোফার বাড়ি উপজেলার কাছিয়াবুনিয়া গ্রামে এবং বাকিদের বাড়ি সামুদাবাদ গ্রামে। মামলার পর শনিবার রাতেই উপজেলার পুলঘাট বাজার এলাকা থেকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নবী-নূরকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাঙ্গাবালী থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা কামাল জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী নীব-নূরকে রবিবার (২০ জানুয়ারি) গলাচিপা আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
রাঙ্গাবালী থানার ওসি মিলন কৃষ্ণ মিত্র বলেন, গণধর্ষণের পর ওই কিশোরীকে হত্যা করার আলামত ময়নাতদন্তে পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়ে আমরা মামলাটি রুজু করেছি। এ মামলায় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নবী নূরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।