Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২১ শনিবার, সেপ্টেম্বার ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৪৪ PM
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৪৪ PM

bdmorning Image Preview


শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার পশ্চিম ভাংনাহাটি এলাকায় সিআরসি টেক্সটাইল মিলস্ কারখানা কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কারখানার রিং অপারেটর মোমতাজ উদ্দিন, মুন্নী, ফয়সাল ও সাবিনা আক্তারসহ কয়েকজন শ্রমিক স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ অভিযোগ করেন।

শনিবার দুপুরে ঘটনার সত্যতার জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা ওই কারাখানার গেটে গেলে কর্তৃপক্ষ খবর পেয়ে আটক শ্রমিকদের মুক্তি দিয়ে কাজে যোগদানে বাধ্য করে।    

নির্যাতিত শ্রমিকেরা জানান, তাদের পাওনা ছুটি, সরকারি বিভিন্ন দিবসে ছুটি ও জোর করে কাজে বাধ্য করার প্রতিবাদ করলেই কর্তৃপক্ষ করাখানার ভিতর আটক করে নির্যাতন করে।

শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে থেকে কারখানার ২৫-৩০জন শ্রমিককে কারখানার আবাসিক ভবনে আটক করে নির্যাতন করা হয়। পরে আটক শ্রমিকদের স্বজনেরা গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি অবগত করলে খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে মুক্তি দিয়ে কাজে যোগদানে বাধ্য করে।  

কারখানার নির্যাতত শ্রমিক রিং অপারেটর মোমতাজ উদ্দিন, মুন্নী, ফয়সাল ও সাবিনা আক্তার জানান, পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যার কারনে ছুটি চাইলে কর্তৃপক্ষ ছুটি দেয় না। সরকারি বিভিন্ন দিবসে ছুটি থাকলেও ছুটি দেয় না। কারখানায় ৫ মিনিট বিলম্বে প্রবেশ করলে ওই দিনের হাজিরাসহ হাজিরা বোনাস দেওয়া হয় না। সঠিক সময়ে বেতন না দিয়ে জোর করে কাজে বাধ্য করানো হয়। বিভিন্ন অজুহাতে মাস শেষে মূল বেতন থেকে টাকা কর্তন করা হয়।

আর এসবের প্রতিবাদ করলে মালিক পক্ষ ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মারধর করে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়ারও অভিযোগ করেন শ্রমিকেরা।

শ্রমিক মোমতাজ উদ্দিনের বোন তাহমিনা আক্তার ইভা জানান, কারখানা ভেতর মোমতাজকে আটক করে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে শনিবার সকাল থেকেই কারখানার প্রধান ফটকে অপেক্ষা করলেও ভাইয়ের সাথে কর্তৃপক্ষ দেখা করার সুযোগ দেয়নি। মোমতাজের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তার রিসিভ করার পর তার কাছ থেকে মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা কারাখানা গেটে আসার খবরে কর্তৃপক্ষ মোমতাজ উদ্দিনকে মুক্তি দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অধিকাংশ শ্রমিকদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। তাদরেকে স্বল্প বেতনে নিয়োগ দিয়ে কাজ আদায় করা সহজ। তাই কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকদের চাইতে অপ্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের নিয়োগে আগ্রহ রয়েছে।

কারখানার মানব সম্পদ ও প্রশান বিভাগের উর্ধ্বতন ব্যকস্থাপক আরিফুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের অভিযোগগুলো সঠিক নয়। একসাথে ১০/১২জন শ্রমিক ছুটির আবেদন করলে পর্যায়ক্রমিকভাবে তাদেরকে ছুটি দেওয়া হয়। সরকারী বিভিন্ন দিবসে স্বেচ্ছায় কাজ করতে ইচ্ছুক শ্রমকিদেরকে অতিরিক্ত মুজুরী দিয়ে কাজ করানো হয়। শ্রমিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ভাই-বোনদেরকে শারীরিক গঠনে ১৮ বছরের ওপরে হওয়ায় চাকরি দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।  

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, শ্রমিকদের অভিযোগ সঠিক। কর্তৃপক্ষ কারখানার ভিতরে আবাসিক ভবনে তাদেরকে চাপ প্রয়োগ করে আটক করে রাখে এবং জোরপূর্বক কাজ করতে বাধ্য করে।

Bootstrap Image Preview