Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ মঙ্গলবার, আগষ্ট ২০২৫ | ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাংলাদেশকে ধ্বংসের জন্য বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী ২০২২, ১২:২৫ AM
আপডেট: ২৮ জানুয়ারী ২০২২, ১২:২৫ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে। লবিস্ট নিয়োগের অর্থের উৎস জানতে চেয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ধ্বংস এবং মিথ্যা অপবাদ আর অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। বিদেশি ফার্মকে এই কোটি কোটি ডলার তারা পেমেন্ট করল- এই অর্থ কিভাবে বিদেশে গেল? এটা কোথা থেকে এলো তার জবাব অবশ্যই তাদের দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা এবং ১৬তম অধিবেশনের সমাপনী আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

লবিস্ট ফার্ম নিয়োগের তালিকা দেখিয়ে তিনি বলেন, এই যে তার তালিকা। এটা আমি বক্তৃতার অংশ হিসেবে দিয়ে যাব। কত লাখ ডলার এই বিএনপি খরচ করেছে। আমার প্রশ্ন। এই অর্থ কোথা থেকে তারা পেল? এটা তো বৈদেশিক মুদ্রা। বিএনপি এই বৈদেশিক মুদ্রা কোথা থেকে পেয়েছে। কিভাবে খরচ করেছে? লবিস্ট কিসের জন্য? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য। নির্বাচন বানচাল করার জন্য। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। জঙ্গিদের রক্ষা করার জন্য। জাতির পিতার হত্যার জন্য। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য। বাংলাদেশে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে বাধা দেওয়ার জন্য। কোন ভালো কাজের জন্য নয়।

সরকারের লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, হ্যাঁ সব সময় পিআর ফার্ম নেওয়া হয়। যাতে বিনিয়োগ বাড়ে। উৎপাদন বাড়ে। আমরা যেন বেশি রপ্তানি করতে পারি। দেশের অধিকার সংরক্ষণ করার জন্য করা হয়। কিন্তু বিএনপির কাজটি কী ছিল?

র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের র‍্যাবের কিছু অফিসারের বিরুদ্ধে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যদি বলি কাদের ওপর? এখন আমাদের বর্তমান আইজিপি, তখন র‍্যাবের ডিজি ছিলেন। হোলি আর্টিজানে যখন সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে। মানুষ হত্যা করে। এরপর আমরা পদক্ষেপ নেই। সেই সময় আমেরিকার যিনি রাষ্ট্রদূত ছিলেন তিনি টুইট করেছিলেন- হলি আর্টিজেনের সন্ত্রাসী হামলা বাংলাদেশ একা সমাধান করতে পারবে না। কিন্তু পরিকল্পনা করে আমরা পরের দিন সকাল নয়টার মধ্যে জিম্মিদের উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সফলতার সাথে তাদের আক্রমণ মোকাবিলা করি। এর পর-পরই আমেরিকার অ্যাম্বাসেডর টুইটটি সরিয়ে ফেলেন। সেই সাথে বাংলাদেশে আর সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটতে পারেনি।

প্রশ্ন হচ্ছে- যাদেরকে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) স্যাঙ্কশন দিলো তাদের অধিকাংশ এই সন্ত্রাস দমনে ভূমিকা রেখেছিল। তাহলে এরা কেন আমেরিকার কাছে এত খারাপ হলো? সব থেকে ভালো ভালো অফিসার যারা এবং ওই অপারেশনে যারা ছিল। আমার মনে হয় যারা সন্ত্রাস দমনে সফল, যারা দেশটা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে রক্ষা করতে পেরেছে। যারা সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষা করেছে। সাধারণ মানুষের মানবাধিকার সুসংহত করেছে তাদেরও ওপরেই যেন আমেরিকার রাগ। আমি আমেরিকাকে দোষ দেই না। ঘরের ইঁদুর বাঁধ কাটলে কাকে দোষ দেবো?

অর্থমন্ত্রী কিবরিয়ার হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আজকের এই দিনে আমাদের তখনকার সংসদ সদস্য সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া সাহেবকে গ্রেনেড মেরে হত্যা করা হয়েছিল। সেই হত্যার সঙ্গে বিএনপি জড়িত, সেটাও বেরিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, এর বিচারের কাজটিতে বারবার বাধা দিচ্ছে তার পরিবার। যখনই বিচারের কাজটি ‍শুরু হয়, অমনি তার পরিবার একটা বাধা দিয়ে রাখে। কেন ঠিক জানি না।

‘আমার চিন্তা ছিল, দেশটাকে পিছিয়ে যেতে দেবো না’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর আমরা দুই বোন রিফিউজি হিসেবে ৬ বছর বাস করেছি। নাম পরিচয়টাও ব্যবহার করতে পারিনি। কিন্তু আমাদের প্রতীজ্ঞা ছিল, সুযোগ পেলে দেশকে গড়ে তুলব। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে দেশে ফিরি। অনেক বাধা-বিপত্তি, অনেক অপপ্রচার শুনতে হয়েছে। লক্ষ্য স্থির রেখে চলেছি বলে আজ অর্জন করতে পেরেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনায় আমেরিকার আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। কিন্তু আমাদের এখানে কেউ দারিদ্র্যসীমার নিচে যায়নি। বরং দারিদ্র্যের হার বিএনপির আমলের ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। বিশ্বাস করি, আরও কমাতে পারব। যদিও দারিদ্র্য আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমিত অর্থনীতির মধ্যেও আমরা বিনা পয়সায় করোনার পরীক্ষা করাচ্ছি। প্রায় ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা লাগে একেকটি পরীক্ষার জন্য। পাশাপাশি বিনা পয়সায় আমরা টিকাও দিচ্ছি। দেশবাসীকে আহ্বান জানাই, যারা ভ্যাকসিন নেননি, ভ্যাকসিন নেবেন; কোনো অসুবিধা হবে না। আমরা ভ্যাকসিনের জন্য আলাদা বাজেট দিয়েছি। ভ্যাকসিনের অভাব হবে না। যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে মারা যাচ্ছে না। সবাই টিকা নেবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলবেন। যাতে অমিক্রন থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারি।

সরকারের কাছে এখন ২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনে বোরো মৌসুম আসছে। আমাদের খাদ্যের কোনো অভাব হবে না। তবে কিছু কিছু জায়গায় দাম বাড়ানোর জন্য নানা কিছু করা হয়। কিছু কিছু সিন্ডিকেট তৈরি হয়। মাঝে মধ্যে চেষ্টা করে। সেটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। 

Bootstrap Image Preview