Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ বৃহস্পতিবার, আগষ্ট ২০২৫ | ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ইলিশের গায়ে চিহ্ন দিয়ে উজানে ছেড়ে দিচ্ছে ভারত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:০৬ AM
আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:০৬ AM

bdmorning Image Preview


ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর উত্তরে ইলিশের গায়ে চিহ্ন দিয়ে উজানের দিকে সেগুলোকে ছেড়ে দিচ্ছে ভারতের সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

ফারাক্কা বাঁধে গঙ্গার মূলধারার যেসব এলাকায় ইলিশ ডিম পাড়ে, সেসব সংরক্ষণই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। সেই সঙ্গে, উত্তরে ইলিশের গতিপথ জানতেও নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ।

বিশ্বের যে ১১টি দেশে ইলিশ উৎপাদন হয় তার মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে শীর্ষস্থানে। বর্তমানে বিশ্বের ৮৬ শতাংশ ইলিশের জোগান দেয় বাংলাদেশ, যেখানে ভারত দেয় ১০ শতাংশ জোগান।

মাত্র ৪ বছর আগেই বিশ্বের ৬৫ শতাংশ ইলিশের জোগান দিত বাংলাদেশ। এদিকে, ৫ বছর আগে ভারতে ইলিশের উৎপাদন ছিল বিশ্বের মোট উৎপাদনের ২৫ শতাংশ। ইলিশ বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট ইলিশ ধরার ফলেই ইলিশের এই সঙ্কট। ফলে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইলিশ নিয়ে ফারাক্কা থেকে এলাহাবাদ পর্যন্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাড়াতে চাইছে ভারত সরকার।   

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই নতুন এই উদ্যোগ নিল ভারতের সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট। জাটকা (ছোট ইলিশ) মাছ ধরে সেগুলোর গায়ে চিহ্ন দিয়ে গঙ্গার উত্তর দিকে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। পানি থেকে তোলা হলে বেশ অল্প সময়ই বাঁচে ইলিশ। ফলে বেশ সতর্কতার সাথে এই কাজ করা হচ্ছে।  

ছেড়ে দেওয়া চিহ্নিত ইলিশগুলো যদি নদীর উত্তর দিকের এলাকার কোনো মৎস্যজীবীর হাতে পড়ে, তাহলেই ইলিশের গতিবিধি বোঝা যাবে। সেজন্য মৎস্যজীবীদের চিহ্নিত ইলিশ প্রতি দু'শো টাকা করে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা সঞ্জীবকুমার জানান, ইতোমধ্যে প্রায় আড়াইশো চিহ্নিত ইলিশ ধরা পড়েছে গঙ্গার উজানের বিভিন্ন এলাকা থেকে।

সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ফারাক্কার পর থেকে উজানের দিকে ইলিশের প্রজনন এখন প্রায় বন্ধ। ফারাক্কা বাঁধ টপকে গঙ্গার উজানে ইলিশ প্রবেশ করতে না পারায় এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অথচ এই বাঁধ চালু হওয়ার আগে এলাহাবাদ পর্যন্ত প্রচুর ইলিশ পাওয়া যেত। 

নদীর উজানে ব্যাপক পলি, নদী দূষণ এবং নির্বিচারে জাটকা ধরার ফলে ফারাক্কায় ইলিশের পরিমাণ ব্যাপকহারে কমে গিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গঙ্গার নির্দিষ্ট এলাকাগুলোকে ডিম পাড়ার উপযোগী করে তুলে সেগুলো সংরক্ষণের মাধ্যমে নদীতে ইলিশের সংখ্যা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ভারত।  

এদিকে ফারাক্কায় ২৫০ মিটার লম্বা ও প্রায় ২৬ মিটার চওড়া একটি নতুন নেভিগেশনাল লকগেট তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। পুরনো লকগেটটি চালু হয় ১৯৭৮ সালে। তারপর থেকেই উজানে ইলিশের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, নতুন নেভিগেশনাল লকগেট চালু হয়ে গেলে উজানে এলাহাবাদ পর্যন্ত ইলিশের জোগান বাড়বে। এছাড়া মাছের ডিম পাড়ার সম্ভাবনাও তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মৎস্য বিশেষজ্ঞ এ কে সাহু জানান, "ফারাক্কায় ইলিশ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। ডাউন স্ট্রিমে গঙ্গা থেকে ইলিশ ধরে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্যাগিং করে তা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে আপ স্ট্রিমে। এরপর মাছগুলোর গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। এতে ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।" 

  • সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা 
Bootstrap Image Preview