সিলেট জৈন্তাপুর উপজেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র লাল শাপলার ৪টি বিল, ডিবি বিল ও কেন্দ্রী বিলের প্রায় ২ হাজার বিঘা জমি দখল করে চলেছে প্রভাবশালীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় বিলের বড় অংশ লাল শাপলা ধ্বংস করে ও নালা সেচ করে মাছ লুটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। ৪টি বিলের প্রকৃত এরিয়া ডিমারগেশন করে সংরক্ষণে বাঁধ নির্মাণ ও অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে বিলগুলো রক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ও পরিবেশবাদীরা।
স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় কেন্দ্রী ও ডিবি বিলের পশ্চিম অংশে প্রায় ২ শতাধিক বিঘা জমির লাল শাপলা ইতিমধ্যে উপড়ে ফেলে জমি দখল করে ধান লাগানো হচ্ছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বললেন, বিলের বড় একটি অংশে অপরিকল্পিত ভাবে বাঁধ নির্মাণ করে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ লুঠ করে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় কেন্দ্রী গ্রামের বাসিন্দা শৌলেন্দ্র জানান, বিলের পানি বন্ধ করে দেওয়ায় আমার দখলে থাকা জমিতে এবার ধান রোপণ করা যাবে না। অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ করায় নিচের জায়গাগুলো অন্যরা দখল করে শাপলা তুলে ফেলে ধান লাগাচ্ছে। যারা ধান চাষ করছেন তারা কেউই লিজ কিংবা বন্দোবস্ত নেয়নি।
জানা গেছে, ইউপি সদস্য আহমদ আলীর নেতৃত্বে বাঁধ দেওয়া হয়েছে এবং বিলের অপর অংশ পানি ছেড়ে মাছ ধরা হচ্ছে। সম্প্রতি সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌরীন করিম শাপলা বিল সুরক্ষার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।
ওই কমিটির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমদ ও কোষাধ্যক্ষ ইমরান আহমদ এই ইত্তেফাককে জানান- আমরা নিজের টাকা খরচ করে লাল শাপলার বিলটির বিভিন্ন নালার বাঁধ দিয়ে পানি ধরে রেখেছি। সম্প্রতি বিলের মধ্যে দিয়ে যে বাঁধ দেওয়া হয়েছে এবং বিলের বড় একটি অংশ শুকিয়ে এবং শাপলা ধ্বংস করে কোনো প্রকার ইজারা বা বন্দোবস্ত না নিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। বিলের ভূমিতে ধান রোপণ করতে অবৈধভাবে কয়েক মাসের জন্য ঘর নির্মাণ করে ফসল ফলিয়ে তারা চলে যাচ্ছে। আমরা চাই প্রকৃত ভাবে ৪টি বিলের (কেন্দ্রী বিল, ডিবি বিল, হরফকাটা বিল এবং ইয়াম বিল) প্রকৃত এরিয়া ডিমারগেশন করে পরিপূর্ণ পর্যটন এরিয়া ঘোষণা করা হোক। তবে যেখানে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে বিলের প্রায় ২ শতাধিক বিঘা জমি বেদখল হবে, সেই সঙ্গে শাপলা বিলটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারাবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, শাপলা বিলে একটি অংশ দখল বা দখলের চেষ্টা কোনো মতে মেনে নেওয়া হবে না।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসি কান্ত হাজং বলেন, আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধ করেছি। এখানে বাঁধ দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও হয়নি। বিষয়টি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।