ধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী বৃহস্পতিবার ৩ অক্টোবর চারদিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। টানা তৃতীয়বারের মতো শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর এবং নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটাই বাংলাদেশের সরকার প্রধানের প্রথম ভারত সফর। দক্ষিণ এশিয়া চলমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার এই সফর বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। আগামী ৫ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এর আগে ৪ অক্টোবর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ভারতীয় অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি।
প্রতিবেশী দুই দেশে শীর্ষ দুই নেতার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুটি বিষয় গুরুত্ব পেতে পারে বলে কূটনৈতিকরা মনে করছেন। আলোচনায় প্রাধান্য পাবে তিস্তার পানি বণ্টন ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু।
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে শনিবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যোগাযোগ, সংস্কৃতি, কারিগরি সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে।
তিনি বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ৫ অক্টোবর বৈঠকের পর মূলত যোগাযোগ, সংস্কৃতি, কারিগরি সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে এ পর্যন্ত ৭ থেকে ৮টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয় নিশ্চিত হয়েছে। তবে এ সংখ্যা ১০ টিতেও উন্নীত হতে পারে। হাইকমিশনার আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে পানি সহযোগিতা-সংক্রান্ত আটকে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, তিস্তা ও রোহিঙ্গা ইস্যুসহ সকল বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে আমরা কোনো ধারণা পোষণ করতে পারছি না।
ভারতের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজেন (এনআরসি) বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকে এনআরসি প্রশ্নে বাংলাদেশকে উদ্বিগ্ন না হতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উল্লেখ করে হা্ইকমিশনার বলেন, এটি তাদের ইস্যু, তাদেরকেই এটি হ্যান্ডেল করতে দিন। এনআরসি নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই।
সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, , ৭টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন-সংক্রান্ত কমিটি গঠন, গঙ্গা ব্যারাজ ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য যৌথ কমিটি গঠন এবং আবহাওয়া পূর্বাভাস-সংক্রান্ত সহযোগিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউসে। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে আয়োজিত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।