সারাদেশে গুজব ছড়ানোর পর বিএনপি এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের উন্নয়নে বিএনপির সমস্যা বলে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে দেশে তারা নানাধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
বিএনপি দেশে গুজব ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তারা প্রথমে পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে, ছেলেধরা নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে, তারপর হারপিক আর ব্লিচিং পাউডার নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে। এরপর এখন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়েও গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এরা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে, হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে গুজবের আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে গুজবের আশ্রয় নিয়েছে বিএনপি। এগুলো হয়তো বুদবুদ তৈরি করতে পারে। বুদবুদ যেমন হাওয়ায় মিলিয়ে যায়, তারাও ঠিক হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে। যারা দেশের উন্নয়ন চায় না, সমাজের অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে, যারা দেশবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে দেখলাম, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলে নাকি ডেঙ্গু মশা চলে যাবে। অর্থাৎ তারা এটি প্রমাণ করছে যে, রাজনৈতিকভাবে তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না। তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আদালতের মাধ্যমে তার মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের তো কোনও বাধা নেই। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি যদি মুক্তি পান, সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকেও কোনও বাধা নেই।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আইনি লড়াইয়ের পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আইনজীবীদের মাধ্যমে আইনি লড়াই জোরদার করুন। আপনাদের আইনজীবীদের মধ্যে যে নানাধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে, সেটি কাটিয়ে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করুন। তাহলে হয়তো আইনি লড়াইটা জোরদার হবে।
জিয়াউর রহমান জাতিসংঘে পাকিস্তানের পক্ষে ওকালতি করেছিলেন— এমন দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশ যখন অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন যেই শক্তিটি দেশের অভ্যুদয় চায়নি, সেই শক্তির পরবর্তী প্রজন্মের আশ্রয়স্থল হচ্ছে জিয়াউর রহমান। যারা বাংলাদেশ চায়নি, তাদেরকে পুনর্বাসিত করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের ডেপুটি লিডার হিসেবে জাতিসংঘে গিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে ওকালতি করেছিলেন যে- ‘বাংলাদেশে কোনও মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে না।’
জাপান বাংলাদেশের এম নম্বর উন্নয়ন সহযোগী দেশ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে জাপানের মতো একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই কারণে প্রথম থেকেই জাপান বাংলাদেশের এক নম্বর উন্নয়ন সহযোগী। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা জাপানের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন সহযোগিতা পেয়েছি।
কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার কারণে সাড়ে তিন বছরের মাথায় সেই স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায় বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের জন্য বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার প্রমুখ।