Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ বুধবার, জুলাই ২০২৫ | ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত সুনামগঞ্জ ও দিনাজপুরের নিম্নাঞ্চল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০১৯, ১১:২৬ AM
আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯, ১১:২৬ AM

bdmorning Image Preview


সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গত তিন দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে পৌরশহরসহ জগন্নাথপুরের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের টানা বর্ষণে পৌরশহরের ইকড়ছই আবাসিক এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া জগন্নাথপুর, বলবলসহ পৌরসভার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের গাজীরকুল, মোজাহিদপুর, দয়ালনগর ও পাইলগাঁও গ্রামেও পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকেছে।

পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের প্যানল চেয়ারম্যান শাহান আহমদ বলেন, ‘গত তিন দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আমাদের ইউনিয়নের চার-পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের অনেকের বাড়ির উঠানে পানি উঠে গেছে। পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুল আলম মাসুম বলেন, জগন্নাথপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় কুশিয়ারা নদী ও উপজেলা নলজুর নদীর পানি বেড়েছে। এতে কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকেছে।

অন্যদিকে উজানের ঢল ও টানা বর্ষণে সুনামগঞ্জের প্রধান নদ-নদী ও সীমান্ত নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। বিশেষ করে সীমান্ত নদী যাদুকাটা, সোমেশ্বরী, চলতি, খাসিয়ামারা, চেলাসহ বিভিন্ন নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ জেলা শহরের পিটিআই ক্যাম্পাস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ভবন, শহরের সাববাড়ি, কাজীর পয়েন্ট, নবীনগর, উকিলপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের একটি অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া বলেন, ‘ভারতের মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে ঢলের পানি সুনামগঞ্জে নামছে। এতে শহরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।’

এদিকে দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজারে সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমছে। এতে সাধারণ মানুষের কেনাকাটা ও চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা বলেন, বাহাদুর বাজার ঘিরে কোনো ড্রেনেজব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বাজারে হাঁটুপানি জমছে। ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা রাস্তায় উঠে আসে। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান চান তাঁরা। তা ছাড়া দিনাজপুরের পার্বতীপুরে গত বৃহস্পতিবারের ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়নের বড়চণ্ডীপুর, চৈতাপাড়া, জাহানাবাদ, বাজারপাড়া ও দাঁড়ারপাড় গ্রামের আধাপাকা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাজারপাড়া গ্রামের আ. রউফের দুটি টিনের ঘরসহ গোয়ালঘর, মোকছেদুল হকের দুটি ঘর, আব্দুস সালাম, সুবাস চন্দ্র, আ. মান্নান, ইয়াছিন ও আনোয়ারের ঘর ঝড়ের কবলে ভেঙে গেছে।

স্থানীয় খালেকুলজ্জামান বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘূর্ণিঝড়ে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এ সময় বাজারপাড়া গ্রামে ঝড়ের কবলে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটিসহ ২৫-৩০ জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে।

পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহানুল হক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এর তালিকা তৈরি হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা ত্রাণ পুনর্বাসন দপ্তর থেকে আর্থিক সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী রংছাতি, খারনই, লেংগুড়া ও নাজিরপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এসব অঞ্চলের প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে গনেশ্বরী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পর তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

Bootstrap Image Preview