Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ বুধবার, জুলাই ২০২৫ | ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘কিলিং স্কোয়াড ০০৭’ গ্রুপে রিফাত হত্যার নির্দেশনা দেয় নয়ন বন্ড

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০১৯, ০৯:৫৯ AM
আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯, ০৯:৫৯ AM

bdmorning Image Preview


বরগুনায় প্রকাশ্যে নেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে খুনের কাণ্ডে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। এ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী গতকাল রাত পর্যন্ত ধরা পড়েনি।

এদিকে নানা অপরাধ ও অপকর্মের লক্ষ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ‘কিলিং স্কোয়াড ০০৭’ নামে একটি গ্রুপ খুলেছিল নয়ন। এ গ্রুপের বার্তায় আসে রিফাত শরীফকে হত্যার নির্দেশ। হত্যাকালের ভিডিও ফুটেজের পাশপাশি কিলিং স্কোয়াড ০০৭-এ আদান-প্রদান করা খুনিদের তথ্যাদিও এখন রিফাত হত্যাকাণ্ডে অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তের অন্যতম ক্লু।

জানা গেছে, ঘাতক নয়ন বন্ড বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ডের নামের সঙ্গে মিলিয়ে তার সন্ত্রাসী গ্রুপের নাম রাখে ‘০০৭’। এমনকি নিজের নামও ওই গোয়েন্দা চরিত্র অনুযায়ী ‘নয়ন বন্ড’ রাখে। তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে যুক্ত করে রিফাত ফরাজীকে। বরগুনার কলেজ রোড, ডিকেপি, দীঘিরপাড়, কেজিস্কুল ও ধানসিঁড়ি সড়ক এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতো এ গ্রুপের সদস্যরা। নয়নের নেতৃত্বে গ্রুপটি পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থীদের মেসগুলোতেও প্রায়ই হানা দিয়ে লুটতরাজ করত। ছিনতাই-চাঁদাবাজির পাশপাশি নারীদের উত্ত্যক্ত করাও ছিল ০০৭ গ্রুপের সদস্যদের নিত্যকাজ।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রিফাত শরীফকে হত্যার মিশন ঠিকঠাক মতো সম্পন্ন করতে ঘটনার আগের দিন সকাল থেকেই ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে খুনের নানা ছক কষে নয়ন বন্ড। কোথায়, কীভাবে হত্যা করা হবে, কিলিং মিশনে থাকা সদস্যদের কার কী ভূমিকা থাকবে, তা ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে জানিয়ে দেয় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী।

অভিযোগ রয়েছে-নয়ন বন্ডের গ্রুপটি ২০১৭ সালে রাকিব নামের এক কিশোর ও জীবন নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করে। ০০৭ গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ভাড়ায়ও খাটত। তাদের বিরুদ্ধে ৮ থেকে ১০টি মামলা রয়েছে; কিন্তু প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে তারা দিনের পর দিন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।

রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায়ও গ্রেফতার এড়াতে বুধবার সন্ধ্যার পরই নয়ন ও রিফাত ফরাজী আত্মগোপন করে। গতকাল পর্যন্ত এ দুই ঘাতক ধরা পড়েনি। অবশ্য তারা যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সে জন্য দেশের সব ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে কোনো কোনো সূত্র দাবি করেছে, তারা দুজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেই আছে। তবে কেউ স্বীকার করছে না।

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ‘নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিমের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি হাসান ও চন্দনকে সাতদিন করে আর সন্দেহভাজন নাজমুল হাসানকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।’

এদিকে রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, ‘ঘটনার দুদিনেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মূল আসামিরা ধরা পড়েনি। তবু গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমার ছেলে হত্যার ঘটনায় তৎপরতাসহ গণমাধ্যমের সহায়তায় আমি সন্তুষ্ট। আমি আশা করি শিগগিরই মূল আসামিরা ধরা পড়বে এবং আমি আমার ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার পাব।’

Bootstrap Image Preview