ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের ছাড় দেয়া হবে না।
শুক্রবার (১৪ জুন) বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ হুসিয়ারি উচ্চারণ করে
প্রধানমন্ত্রী তার সূচনা বক্তব্যে প্রতিটি খাত ধরেই বাজেটে বরাদ্দ ও এর পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের কথা তুলে ধরেন। নিয়ম অনুযায়ী অর্থমন্ত্রী এ সংবাদ সম্মেলন করার কথা। তবে তিনি অসুস্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংবাদ সম্মেলনে বাজেট বিষয়ে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরছেন। বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
শিক্ষা খাতের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা খাতে সরকারে সামগ্রিক লক্ষ্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ানো। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখতে, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে জ্ঞান বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদেরও আধুনিক বিশ্বের সমতুল্য করে তোলা হবে। এছাড়া মানসম্মত উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করা ও শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহিত করাও সরকারের লক্ষ্য।
স্বাস্থ্য খাতকেও সরকার অন্যতম গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেশব্যাপী সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন করে সেবা নিয়ে থাকে, এর ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সামাজিক সেবাও নিশ্চিত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছি, যা দেশের মোট জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। আমাদের লক্ষ্য প্রবৃদ্ধি উচ্চ স্তরে নিয়ে যাওয়া। সেই লক্ষ্যে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো, ব্যবসাবান্ধব ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, আর্থিক খাতের সংস্কার ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। এছাড়া সরকারের গৃহীত মেগা প্রকল্প ছাড়াও অবকাঠামো খাতে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের দাবির পরিপ্রোক্ষিতে বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান রাখা হয়েছে। এই খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৭ হাজার ৬২০ কোটি যা, মোট বাজেটের বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও জিডিপি’র ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। কেবল শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নয়, মোট ২৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বর্তমান অর্থবছরে ছিল ২২ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। আর স্বাস্থ্য খাতেও কেবল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় নয়, মোট ১২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আগামী অর্থবছরে এই খাতে মোট বরাদ্দ ২৯ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ০২ শতাংশ ও বাজেটের ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের জন্য একশ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে উৎসাহিত করতে স্টার্টআপের জন্যও একশ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।