তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে ধারণার চেয়ে দ্রুত গতিতে বরফ গলছে। এভাবে বরফ গলা অব্যাহত থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর পড়বে।
গ্রিনল্যান্ডের ইলুলিসাত শহরে অনুষ্ঠিত ওয়াই জি এল ইম্প্যাক্ট এক্সপিডেশন কর্মসূচির অংশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতি খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করতে বিশ্বের আরও ২০ জন ইয়ং গ্লোবাল লিডারসহ হেলিকপ্টারে করে পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের আমন্ত্রণে গ্লোবাল ইয়ং লিডারগণ এ এক্সপেডিশনে এ অংশগ্রহণ করেছেন। এই সময় তারা মাঝপথে বিরতি দ্বীপের এক জায়গায় নেমে বিশাল আকৃতির বরফ গলা দৃশ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতি সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন।
এ বিষয়ে পলক তাঁর অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে ধারণার চেয়ে দ্রুত গতিতে বরফ গলছে। এভাবে বরফ গলা অব্যাহত থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর পড়বে।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে পলক বলেন, মহাকাশ গবেষণা বিষয়ক মার্কিন সংস্থা নাসার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেখানে ২০০৩ সালের পর বরফ গলার হার চার গুণ বেড়ে গেছে, যা অতীতে কখনোই ঘটেনি। এক গবেষণায় দেখা গেছে ২০১২ সালে গ্রিনল্যান্ডে ৪০ হাজার কোটি টনের বেশি বরফ গলেছে, যা ২০০৩ সালের চেয়ে চার গুণ বেশি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বরফ গলেছে দক্ষিণ গ্রিনল্যান্ড। এভাবে গ্রিনল্যান্ডের সব বরফ গললে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ২৩ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যাবে যার ফলে বাংলাদেশের মতো উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর অনেক অংশ পানির নীচে তলিয়ে যাবে এবং প্রায় ২ কোটি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তর করতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর ফলাফলগুলোর কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর গভীর প্রভাব পড়ে, দরিদ্র দেশগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে বাধ্য হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তাপমাত্রা বৃদ্ধি কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গমন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি কারণে কৃষি ও জীবিকা প্রভাবিত করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ তার ভৌগলিক অবস্থার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদিও এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয় কিন্তু ভুক্তভুগী হবে। তাই আমাদের এখনি উন্নত দেশগুলোকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন তারা বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমানোর ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেয়।এই জন্য যারা দায়ী সেই সকল দেশের দায়িত্ব নিতে হবে।