Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ রবিবার, আগষ্ট ২০২৫ | ২ ভাদ্র ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঈদের আগেই খুলে দেওয়া হবে দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ মে ২০১৯, ০১:১০ PM
আপডেট: ১২ মে ২০১৯, ০১:১০ PM

bdmorning Image Preview


দেশের অর্থনীতির প্রাণ হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নতুন নির্মিত দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু ঈদ যাত্রার আগেই আগামী ২৫ মে খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এর আগে গত ১৬ মার্চ উদ্বোধন করা হয়েছে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু। তিনটি সেতুই চার লেনের।

সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরা বলছেন, নতুন দুটি সেতু চালু হলে যানজটের তীব্রতা কমবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াতে কমে যাবে প্রায় দেড় ঘণ্টা।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এই তিন সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে বিদ্যমান সেতুর কাছে। পুরনো তিনটি সেতুই দুই লেনের।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তিন সেতু নির্মাণের জন্য নেওয়া প্রকল্পে সব মিলিয়ে ব্যয় হচ্ছে আট হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। তার মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দিয়েছে ছয় হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। বাকি অর্থের জোগান দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার লেন চালুর পরও তিনটি সেতু সরু হওয়ায় তীব্র যানজট রয়েই যায়। এ যানজট কমাতে নতুন এ তিনটি সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দুটি সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তাঁর কাছে এ জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও এর মধ্যে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আশা করা হচ্ছে, তিনি আগামী ১৫ মে দেশে ফিরবেন। তিনিও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকর ইচ্ছা পোষণ করেছেন।

ওবায়দুল কাদেরের অনুপস্থিতিতে আগে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ওবায়দুল কাদের সুস্থ হয়ে ফিরলে তাঁকে নিয়ে নতুন সেতু পরিদর্শনে যাবেন তিনি।

নতুন নির্মিত মেঘনা ও গোমতী সেতুর বাকি কাজ শেষ করতে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা শুরু হয়েছে পাঁচ দিন আগে। এ কারণে তীব্র যানজট হচ্ছে। গত শুক্রবার সকাল ৯টায়ও এ মহাসড়কে যানজটে পড়ে যাত্রীরা। তবে গতকাল শনিবার সকালে যানজট ছিল না।

সরু সেতু ছাড়াও মহাসড়কে যানজটের আরেকটি বড় কারণ টোল প্লাজায় টোল আদায়ে ধীরগতি। এ কারণে গত ৩০ এপ্রিল মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজায় একটি করে লেনে উইন্ডশিল্ড বেইজড ফার্স্ট ট্র্যাক ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন বা ইটিসি চালু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে টোল প্লাজায় কোনো যানবাহন না থামিয়ে ও নগদ অর্থ ছাড়াই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টোল পরিশোধ করা যায়। তবে তা সব কাউন্টারে চালু হয়নি।

দাউদকান্দিতে টোল প্লাজা পরিচালনায় কর্তব্যরত কর্মকর্তা ইউসুফ শিকদার বলেন, দাউদকান্দিতে ১২টি কাউন্টারের একটিতে নতুন পদ্ধতিতে টোল নেওয়া হচ্ছে। এনা, হানিফ, গ্রিন লাইনের মতো পরিবহন কম্পানির গাড়ি এ পদ্ধতিতে টোল দিচ্ছে। সব ধরনের পরিবহন এ পদ্ধতির আওতায় এলে যানজট কমবে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হলে আরো বেশিসংখ্যক লেনে চালু করা হবে।

টোল প্লাজার হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় এই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করছে ৩০ হাজারেরও বেশি। রোজায় পণ্য পরিবহন বেড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই মহাসড়ক ব্যবহার করে সরবরাহ করা হয় পণ্যসামগ্রী। চলাচলকারী যানবাহনের ৬০ শতাংশই পণ্যবাহী। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ এ মহাসড়ক দিয়েই হয়।

সওজ অধিদপ্তরের সমীক্ষা অনুসারে, দিনে গড়ে প্রায় ২৫ হাজার গাড়ি চলাচল করে এই মহাসড়ক দিয়ে। আর প্রতিবছর গাড়ি চলাচল বাড়ছে ১০ শতাংশ হারে। চলাচলকারী গাড়িগুলোর মধ্যে ৬০ শতাংশ বাণিজ্যিক, ২৭ শতাংশ যাত্রীবাহী, বাকি ১৩ শতাংশ হালকা যান। তিন হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সওজ অধিদপ্তরের অধীনে চার লেন প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ শেষ হলেও চট্টগ্রাম, কুমিল্লার পদুয়ার বাজার ও ফেনীর ফতেহপুরে লেভেলক্রসিংয়ের ওপর উড়াল সেতু নির্মাণকাজ বাকি ছিল। সেগুলোর কাজ শেষ হয়েছে।

Bootstrap Image Preview