পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটা নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছি। কেউ কোনো ধরনের গেম খেলার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। টানা দরপতনের পর ওই সব পদক্ষেপের মধ্যে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ পয়েন্ট বেড়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৩ পয়েন্ট।
আগের দিন বড় দরপতনের মধ্য দিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ফিরে গিয়েছিল ২৭ মাস আগের অবস্থানে। তা নিয়ে সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতাসহ একাধিক সংসদ সদস্য কথা বলার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসবাণী আসে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই শেয়ারবাজার নিয়ে অতীতে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। এটা যেন স্থিতিশীল থাকে তার জন্য অনেক ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাপনায় যা যা করা দরকার, এটা তো আমরা করে যাচ্ছি। সব রকম সুযোগও আমরা দিচ্ছি। হঠাৎ খুব বেশি ওঠে আবার পড়ে না যায়, সে ব্যাপারে যা নিয়ন্ত্রণ করার, আমরা নিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে কিছু মানুষকে ব্যবহার করা হয় মানুষ হত্যার জন্য। তাদের দিয়ে মানুষ হত্যা করানো হয়, বলা হয় তারা বেহেশতে যেতে পারবে। নিরীহ মানুষকে হত্যা করে বেহেশতে যাবে, এটা কিভাবে চিন্তা করে? মানুষ হত্যা তো মহাপাপ। যারা নিরীহ মানুষকে হত্যা করে তারা কিভাবে বেহেশতে যাবে? যারা এদের ব্যবহার করে ধর্মান্ধ করছে, মানুষকে হত্যা করাচ্ছে, যারা শিক্ষাটা দিচ্ছে তারা আগে কেন বেহেশতে যাচ্ছে না? তিনি আরো বলেন, ‘অবাক লাগে, কিছু সম্পদশালী ধনী পরিবার উচ্চশিক্ষিত পরিবারও ধর্মান্ধের পথে যাচ্ছে। আমি জানি না যারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়, তারা কিভাবে এভাবে ধর্মান্ধ হয়ে যায়? আমরা চাই এই ধর্মান্ধতা থেকে মানুষ মুক্তি পাক। আর যারা শিক্ষা দিচ্ছে তাদের বলব আগে আপনারা যান, বেহেশতে গেলেন কি না সেটা আগে জানান, তারপর আমরা যাব।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবুজ আমাদের জাতীয় পতাকার রং। এই সবুজের মধ্যে লাল রং দিয়ে বাংলাদেশ লেখা হয়েছিল। আইসিসি আপত্তির কারণে তা পরিবর্তন করে সাদা লেখা হয়েছে। এটাতে পাকিস্তানের জার্সির সঙ্গে মেলানোর কিছু নেই, ঠিক হবে না।’
ওয়াসার পানি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে পানির জন্য হাহাকার ছিল। সেই সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। কিছু জায়গায় পানির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যেখানে পানি জমা হয়, সেই ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার করা হবে। পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে ট্যাংক পরিষ্কার কি না, তা আগে দেখুন। তবে ওয়াসা যদি এ ক্ষেত্রে দায়ী থাকে, তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩৫ বছরে যদি কেউ চাকরিতে প্রবেশ করে, ট্রেনিং নিতে নিতে তাদের বয়স ৩৮ বছর হয়ে যাবে। ২২-২৪ বছরে আরেকজন চাকরিতে ঢুকলে তার সঙ্গে তফাত অনেক বেশি হয়ে যাবে। তাই এমন দাবি তো বাস্তবসম্মত নয়।