Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২২ শুক্রবার, আগষ্ট ২০২৫ | ৭ ভাদ্র ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

তিতাসে ২২ খাতে হচ্ছে দুর্নীতি!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:০২ PM
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:০২ PM

bdmorning Image Preview


তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডে ২২ খাতে সম্ভাব্য দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের দুর্নীতি-সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিম কর্তৃক প্রণীত অনুসন্ধানী এবং পর্যবেক্ষণমূলক প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

দুর্নীতির খাত গুলো হলো- অবৈধ সংযোগ, নতুন সংযোগে অনীহা এবং অবৈধ সংযোগ বৈধ না করা, অবৈধ লাইন পুনঃসংযোগ, অবৈধ সংযোগ বন্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেয়া, অদৃশ্য হস্তক্ষেপে অবৈধ সংযোগ, গ্যাস সংযোগে নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ না করা, বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহককে শিল্প শ্রেণির গ্রাহক হিসেবে সংযোগ প্রদান, মিটার টেম্পারিং, অনুমোদনের অতিরিক্ত বয়লার ও জেনারেটরে গ্যাস সংযোগ, মিটার বাইপাস করে সংযোগ প্রদান-সংক্রান্ত দুর্নীতি, এস্টিমেশন অপেক্ষা গ্যাস কম সরবরাহ করেও সিস্টেম লস দেখানো, ইচ্ছাকৃতভাবে ইভিসি (ইলেকট্রনিক ভলিউম কারেক্টর) না বসানো ইত্যাদি।

আজ (বুধবার) দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে ১২ দফা সুপারিশও করেছে দুদক।

প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুর্নীতির জনশ্রুতি রয়েছে এমন ২৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান আইন, বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ/অপচয়ের দিকগুলো পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে এসব প্রতিষ্ঠানের জনসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সফলতা ও সীমাবদ্ধতা, আইনি জটিলতা, সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি ও দুর্নীতির কারণগুলো চিহ্নিত করে তা বন্ধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২০১৭ সাল থেকে ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করে দুদক। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি টিমের প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব টিম অনুসন্ধান চালিয়ে দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে। তিতাস গ্যাস-সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিম তাদের অনুসন্ধানকালে তিতাস গ্যাস কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা এবং এ বিষয়ে যারা সম্যক ধারণা রাখেন তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করে।

প্রাতিষ্ঠানিক টিম তাদের অনুসন্ধানে পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্যসহ ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতাদের বক্তব্য, প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রতিবেদন, নিরীক্ষা ও অডিট প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করে। সার্বিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক টিম তিতাস গ্যাস কোম্পানির দুর্নীতির উৎস ও ক্ষেত্র চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে প্রণীত সুপারিশমালা প্রতিবেদন আকারে কমিশনে দাখিল করে।

তিনি বলেন, কমিশনের এই প্রতিবেদন অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সহজ হবে। এভাবে দুর্নীতি সংঘটনের আগেই তা প্রতিরোধ করা গেলে, মামলা-মোকদ্দমা করার প্রয়োজন পড়বে না।

তিনি আরও বলেন, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতার যে ঘোষণা দিয়েছে, কমিশন সে ঘোষণা বাস্তবায়নে, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে বহুমাত্রিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এসব প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয়েছে।

এ সময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দুদকের এই কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, দুদকের এই প্রতিবেদন গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে শূন্যসহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছেন, এ মন্ত্রণালয়ে তা কার্যকরভাবে অনুসরণ করা হবে।

Bootstrap Image Preview