ভারত থেকে পর্যটক নিয়ে নারায়ণগঞ্জে এলো জাহাজ

ভারতের কলকাতা থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ আরভি বেঙ্গল গঙ্গা নারায়ণগঞ্জে এসে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, ইতালি ও অস্ট্রেলিয়ার ছয়জন পর্যটকসহ ১৯ জন যাত্রী ও ৩০ জন ক্রু নিয়ে জাহাজটি নারায়ণগঞ্জে এসে পৌঁছায়।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় জাহাজটি বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের ভিআইপি জেটিতে এসে নোঙর করে।

এ সময় নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক গুলজার আলী, উপপরিচালক মো. শহীদুল্লাহসহ অন্যান্য কর্মকর্তা বিদেশি অতিথিদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।

তাদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া দীপক বড়ূয়া, ইন্ডিয়া ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (আইডব্লিউআই) সাবেক চেয়ারম্যান নোটন গুহ বিশ্বাস এবং আরভি বেঙ্গল গঙ্গার চেয়ারম্যান রাজ সিংসহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীও রয়েছেন।

এর আগে গত ২৯ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টায় কলকাতার খিদিরপুর বন্দর থেকে জাহাজটি বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা করে। সুন্দরবন হয়ে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় খুলনার আংটিহারা বন্দরে জাহাজটি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর মংলা, বরিশাল ও চাঁদপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জে এসে নোঙর করে।

যাত্রাপথে জাহাজটির তত্ত্বাবধান ও পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে গালফ ওরিয়েন্ট সি ওয়েজ লিমিটেড এবং জার্নি ওয়ালেট লিমিটেড নামের দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

আরভি বেঙ্গল গঙ্গা শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে অবস্থান করবে। শনিবার সকালে জাহাজটির পর্যটকরা সোনারগাঁর জাদুঘর, বড় সরদারবাড়ি, পানামনগরী, জামদানি পল্লীসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করবেন।

বিকেলে পাগলা নৌবাহিনীর মেরি অ্যান্ডারসন ভিআইপি জেটির উদ্দেশে জাহাজটি যাত্রা করবে। সেখানে বিদেশি পর্যটকদের স্বাগত জানাবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং নৌপরিবহনমন্ত্রীসহ সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা। আগামী ৮ এপ্রিল সকাল ৮টায় সেখান থেকে জাহাজটি আবার ভারতের উদ্দেশে যাত্রা করবে। ভারত থেকে বাংলাদেশে নৌপথের এই ভ্রমণকে আনন্দদায়ক ও নিরাপদ উল্লেখ করে বিদেশি পর্যটকরা জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাদের মুগ্ধ করেছে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উত্তরোত্তর সাফল্যও কামনা করেন তারা।

আরভি বেঙ্গল গঙ্গার চেয়ারম্যান রাজ সিং জানান, স্বাধীনতার আগে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকলেও এক সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৭০ বছর পর আবার এই যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে সব ধরনের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে বলে মনে করছেন তিনি। বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তায়ও মুগ্ধ তিনি।

এ দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপদেষ্টা দীপক বড়ূয়া জানান, তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। ভারতের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশকেও ভালোবাসেন। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে।

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক গুলজার আলী জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ভারতের এই জাহাজটি বাংলাদেশে সফরে এসেছে। পর্যায়ক্রমে বাণিজ্যিকভাবে পর্যটনের জাহাজ বাংলাদেশ ও ভারতে আসা-যাওয়া করবে। দেশের ১০টি মন্ত্রণালয় এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে।

তিনি জানান, দেশে বর্তমানে ৩৫টি নদীবন্দর রয়েছে। সরকার সব বন্দরকে আধুনিকায়ন করেছে, পর্যায়ক্রমে আরও উন্নয়ন করা হবে।