Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২২ শুক্রবার, আগষ্ট ২০২৫ | ৬ ভাদ্র ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

৩য় দিনের মত চলছে পাটকল শ্রমিকদের অবরোধ, দাবি পূরণ না হলে লাগাতার কর্মসূচি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ১১:২০ AM
আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ১১:২০ AM

bdmorning Image Preview


তৃতীয় দিনের মত ৯ দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করছে খুলনা ও যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের শ্রমিকরা। এ অবরোধের ফলে খুলনা-যশোর মহাসড়ক, নতুন রাস্তা মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সড়ক, বিআইডিসি সড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। রেল চলাচলও ভোর থেকে বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার ( ৪ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে খুলনা-যশোর মহাসড়কের নতুন রাস্তা, আলিম জুট মিলের সামনে ও রাজঘাটে শ্রমিকরা রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ করে। যা বেলা ১২টায় শেষ হবে।

শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সমাবেশ করছেন। শ্রমিকদের আন্দোলনে খুলনার খালিশপুর ও আটরা শিল্পাঞ্চল এবং যশোরের নওয়াপাড়া শিল্পাঞ্চল উত্তাল হয়ে উঠেছে। সড়ক অবরোধ থাকায় মহাসড়কের যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ ও সিবিএ- নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের ডাকে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা এ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন।

শ্রমিক নেতা খলিলুর রহমান জানান, ‘সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ সুপারিশ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পিএফ-গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বিমার বকেয়া প্রদান, টার্মিনেশন, বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, পাট মৌসুমে পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করাসহ নয় দফা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো এখনও বাস্তবায়ন না হওয়ায় রাজপথের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।’

পাটকল শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন জানান, শ্রমিকরা ৮ থেকে ১০ সপ্তাহের মজুরি ও কর্মচারীরা ২ থেকে ৪ সপ্তাহের বেতন না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।  তারা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, ঘর ভাড়া দিতে পারছে না। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই তারা আন্দোলনে নেমেছেন।

এদিকে পাটকল শ্রমিকদের অবরোধের কারণে বৃহস্পতিবারও ভোর ৬টা থেকে খুলনা রেল স্টেশন থেকে কোনও ট্রেন ছাড়েনি। ফলে যাত্রীরা স্টশনেই অবস্থান নিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। খুলনা স্টেশন ও প্লাটফর্মে সব বয়সী যাত্রীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

খুলনা স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার বলেন, ‘বুধবারও সকাল ৬টা থেকে ট্রেন ছাড়া সম্ভব হয়নি। সকাল ৬টার কমিউটার, সাড়ে ৬টার কপোতাক্ষ  এক্সপ্রেসে,  সোয়া ৭টার রূপসা এক্সপ্রেস, ৮টা ৪০ এ চিত্রা এক্সপ্রেস ছাড়া সম্ভব হয়নি। ১২টা পর্যন্ত কোনও ট্রেনই ছাড়া সম্ভব হবে না।’

শ্রমিকরা জানান, শনিবার বিজেএমসিতে বৈঠক হবে। সেখানে আলোচনা সফল হলে এবং ৯ দফা দাবি মেনে নিলে শ্রমিকরা কাজে ফিরে যাবেন। না হলে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার (৭ এপ্রিল) ঢাকায় শ্রমিক নেতারা বৈঠক করবেন। সেখান থেকে লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পাটকল শ্রমিক লীগের সভাপতি সরদার মোতাহার উদ্দিন বৃহস্পতিবার খুলনায় অবরোধ শুরুর সময় তার বক্তব্যে এ সব কথা বলেন। নগরীর নতুন রাস্তা মোড়ে এ সমাবেশ হয়। 

উল্লেখ্য, পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধসহ ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত ২ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে এ অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে টানা ৭২ ঘণ্টার শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হয়। যা ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা পর্যন্ত চলবে।

Bootstrap Image Preview