বহুতল ভবনে অগ্নি নির্বাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনে আগামীকাল থেকে অভিযান শুরু হবে। অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না থাকা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
আজ শনিবার গুলশান-১ নম্বর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কাঁচাবাজার ও সুপার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা বলেন।
রেজাউল করিম বলেন, ‘আগামী রবিবার থেকে রাজউকের পরিদর্শন শুরু করবে। ১৫ দিনের মধ্যে চিহ্নিত করব কোন ভবন পরিকল্পনা বা নিয়মের বাইরে হয়েছে। প্রয়োজনে সিলগালা করে দেব। প্রয়োজনে অপসারণ করব। অথবা উপযোগী অবস্থা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত সব রকম কার্যক্রম স্থগিত রাখব।’
তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসির এ মার্কেটে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সহনীয় নয়। রাজধানীতে যেসব ভবন তৈরী হয়েছে তা একদিনে তৈরী হয়নি। তাই অবৈধ ভবন উচ্ছেদ করতে কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু নতুন ঢাকায় আমরা যেসব স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছি সেখানে রাজউক এর পরিকল্পনার বাইরে চুল পরিমাণ যাওয়ার সুযোগ নেই। একেবারে পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা হচ্ছে’।
ফায়ার সার্ভিসের জরিপ অনুযায়ী ঢাকার বেশিরভাগ ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুধু গুলশান বনানী নয়, ঢাকা শহরের যে কোনও স্থানে যদি অপরিকল্পিতভাবে ইমারত নির্মিত হয়ে থাকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থেকে থাকে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। ভবন তৈরির অনিয়মের সঙ্গে যারাই জড়িত হোক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মালিক হোক, ডেভেলপার হোক, এমনকি রাজউকের কোনো লোক জড়িত থাকলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি তাদের হতে হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
এ সময় অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে নাগরিকদের অভিযোগ করার অনুরোধ জানান গণপূর্তমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কোথাও অপরিকল্পিত, অবৈধ ভবন থাকলে আমাকে তথ্য দিন। আমরা অ্যাকশনে যাব।’
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা করা হবে কিনা- জানতে চাইলে রেজাউল করিম বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো দুর্ঘটনাকে আমরা ছোট করে দেখতে চাই না। আমরা তা খতিয়ে দেখে গভীরে যেতে চাই। এখানে যারা ব্যবসায়ী তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সংবেদনশীল।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘটনাটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেখানে যে দুর্ঘটনা ঘটছে, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী চান, একজন মানুষও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না থাকেন।
এ সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
রাজধানীর গুলশান-১ এর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনায় ২৯১টি দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। শনিবার সকাল পৌনে ৬টার দিকে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ করে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর সদস্যরা।