ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় যথাযোগ্য উৎসাহ উদ্দীপনা এবং অত্যন্ত জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশের ৪৮তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করা করেছে।
২৬ মার্চ বাংলাদেশ দূতাবাস আবাবা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
২৬শে মার্চ পতাকা উত্তোলন এবং অত্র দূতাবাসের কমকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ ও ইথিওপিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকবৃন্দের অংশগ্রহণে সম্মিলিতভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
পূর্বাহ্নের আনুষ্ঠানিকতার পর সন্ধ্যায় আদ্দিস আবাবাস্থ ইথিওপিয়ান স্কাইলাইট হোটেল –এ ৪৮তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ২০১৯ উপলক্ষে মনোজ্ঞ এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
সান্ধ্যায় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন ইথিওপিয়ার সরকারের তিনজন প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যগণ, পররাষ্ট্র এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ইথিওপিয়ার ১৩০টি আবাসিক দূতাবাসের প্রায় শতাধিক দেশের রাষ্ট্রদূত মহোদয়বৃন্দ, বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সংস্থার প্রধানগণ, স্থানীয় সিটি মেয়র, মিডিয়া, বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, স্থানীয় গণ্যমান্য ইথিওপিয়ান এবং ইথিওপিয়ায় কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশীবৃন্দ। বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় জমকালো আনন্দঘন অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে দর্শকবৃন্দের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরে কয়েকটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, রপ্তানিযোগ্য পণ্য, উন্নয়নের বর্তমান ধারা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপগুলোর উপর রচিত বিভিন্ন পোস্টার, সাময়িকী, বই, বুলেটিন, লিফলেট প্রদর্শন ও বিতরণ করা হয়।
ইথিওপিয়ান প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমসমূহ গুরুত্ব সহকারে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস সংক্রান্ত সংবাদ প্রচার করে। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত এ মহতী অনুষ্ঠানের স্বাগত ভাষণে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী সকলের উদ্দেশ্যে তাঁর গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবাতে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এবং ইথিওপিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে বিদ্যমান উষ্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বাধীন সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন এবং অব্যাহত অগ্রগতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন।
তিনি দু’দেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন এবং বিভিন্ন খাতে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক অধিকতর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভবিষ্যত দিনগুলোতে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ব্যাপারে তিনি জোরালো আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ইথিওপিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া এবং প্রশান্ত অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সেগাব কেবেবিউ।
বক্তব্য শেষে প্রতিমন্ত্রীগণ এবং অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতবৃন্দের উপস্থিতিতে অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিশেষ কেক কাটা হয়।
পরিশেষে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য আগত সম্মানিত অতিথিবৃন্দকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয় এবং অতিথিদের উদ্দেশ্যে ঐতিহ্যবাহী ইথিওপীয়, এশীয় এবং বাঙালি খাবার পরিবেশন করা হয়।