২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় সিউলস্থ দূতাবাসের উদ্যোগে স্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য কোরিয়া টাইমস, দ্য জুংআং ডেইলী ও দ্য কোরিয়া পোস্ট –এ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৪৮তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
এ উপলক্ষ্যে সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি হোটেলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার লী তে-হোউপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোরিয়া-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারী ফ্রেণ্ডশিপ এসোসিয়েশনের সভাপতি কিম কিসন, এম. পি. এবং ইউএনএইচসিআর’র শুভেচ্ছাদূত ও স্বনামধন্য অভিনেতা জং উ-সুং।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, গুরত্বপূর্ণ প্রচার মাধ্যমের ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি বিপুলসংখ্যক কোরিয়ান ব্যবসায়ী, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, প্রবাসী বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ঐতিহ্যবাহী কারুপণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন আকর্ষণীয় পর্যটনস্থানের পোস্টার দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল বর্ণিলসাজে সাজানো হয়। বাংলাদেশ ও কোরিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সূচনা হয়।
দেশটিতে কর্মরত রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তার স্বাগত বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধে আত্ম-উৎসর্গকারী ৩০ লক্ষ শহীদ, নির্যাতিতা ২ লক্ষ মা-বোনসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বশান্তি, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন সম্পর্কে তিনি আলোকপাত করেন।
সেই সাথে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধিঞ্চু সম্পর্কের বিভিন্ন দিকও তুলে ধরেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থন প্রদান ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি উভয় দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী কর্মী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও তাদের সক্রিয় ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান অতিথি লী তে-হো বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার সাদৃশ্য তুলে ধরেন। তিনি সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
বিশেষ অতিথি কিম কিসন বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বক্তৃতার পর প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, আগত রাষ্ট্রদূত, মিশন প্রধানদের নিয়ে রাষ্ট্রদূত এ দিবস উপলক্ষ্যে প্রস্তুতকৃত কেক কাটেন। এরপর স্থানীয় বাংলাদেশী শিল্পীদের পরিবেশনায় নাচ-গানের মাধ্যমে বাংলাদেশী সংস্কৃতি তুলে ধরা হয় যা অতিথিরা প্রাণভরে উপভোগ করেন।
সবশেষে বাংলাদেশী ঐতিহ্যবাহী খাবারসহ সুস্বাদু খাবারের মাধ্যমে আগত অতিথিদেরকে আপ্যায়ন করা হয় ।
২৬ মার্চ সকালে রাষ্ট্রদূত দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। দূতাবাসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়। পরে দূতাবাসের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান।
উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাসের উদ্যোগে স্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য কোরিয়া টাইমস, দ্য জুংআং ডেইলী ও দ্য কোরিয়া পোস্ট –এ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়।
এ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পরিবেশিত জাতীয় সঙ্গীতের সাথে সামঞ্জস্য রেখে একযোগে একই সময়ে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।