১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর যে গণহত্যা চালিয়েছিল তা স্মরণ করে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস গণহত্যা দিবস-২০১৯ পালন করেছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংগঠিত গণহত্যা সম্পর্কে কোরিয়ানদের বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কোরিয়ানদের সচেতন করার জন্য দূতাবাসের অনুষ্ঠানে কোরিয়ার শিঙ্গু কলেজের শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানায়। শিক্ষার্থীরা ছাড়াও এ অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাতীয় সঙ্গীতের পর পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠএবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অতঃপর দূতাবাসের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বাণী পড়ে শোনান।
গণহত্যা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে একাত্তরের গণহত্যার উপর Genocide 1971 শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং গণহত্যার উপর Bangladesh Genocide Revisited শীর্ষক পুস্তিকা অতিথিদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
আলোচনা পর্বে বক্তারা ১৯৭১ সালের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উপর আলোকপাত করেন। শিঙ্গু কলেজের শিক্ষার্থী মিস জাং জে-হী তার বাংলা বক্তৃতায় বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যকার ঐতিহাসিক সংগ্রামের সাদৃশ্য তুলে ধরেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ও সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তার বক্তব্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন যে, একাত্তরের গণহত্যার বিষয়টি দক্ষিণ এশিয়া, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল অথবা জাতিসংঘের কোন দাপ্তরিক বা ঐতিহাসিক দলিলে উল্লেখ নেই। তাই এই গণহত্যাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতিপূর্বক নথিভুক্ত করা সম্ভব হলে ভবিষ্যতে কেউ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করার সুযোগ পাবে না।
আলোচনা পর্ব শেষে মুক্তিযুদ্ধের কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়।