প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একটি মুক্তিযুদ্ধ বা গেরিলা যুদ্ধ হবে, সকল ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু পূর্বেই করে গেছেন। সেই যুদ্ধে কিভাবে গেরিলারা ট্রেনিং নেবে বা আশ্রয় নেবে এবং কীভাবে অস্ত্র আসবে সবকিছু। বঙ্গবন্ধু যখন লন্ডনে যান, প্রবাসী বাঙ্গালীদেরও তিনি প্রস্তুত করে রাখেন। তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, একদিন এই দেশ স্বাধীন হবে, শত্রুমুক্ত হবে।
সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে বাংলাদেশে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলার দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেভাবেই সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলা হয়। টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বার্তাটা পৌঁছে যায় সংগ্রাম পরিষদের কাছে।
বিভিন্ন এলাকায় যখনও পাকিস্তানী হানাদাররা আক্রমণ শুরু করেনি, সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রিকশায় করে, চোঙা ফুকিয়ে বা মাইকের মাধ্যমে অথবা লিফলেট লিখে প্রচার করে যে, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয় এবং গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে বন্দী করে দেশদ্রোহীর মামলা দেয়া হয়। ইয়াহিয়া খানের ২৬ মার্চের যে ভাষণ, সে ভাষণে বঙ্গবন্ধুকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে ফাঁসি দেয়ার ঘোষণাও দেয়া হয়েছিলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মবিশ্বাস থেকে জাতীকে যে তিনি প্রস্তুত করেছিলেন। বিজয় যে নিশ্চিত ছিলো, সেটি তিনি আগেই অনুভব করেছিলেন।
এর আগে জাতীয় পর্যায়ে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১২ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে মহান স্বাধীনতা পদক তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতা পদকে ভূষিত ব্যক্তিরা হলেন- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এটিএম জাফর আলম (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী মিসবাহুন নাহার, আব্দুল খালেক (মরণোত্তর) ও অধ্যাপক মোহাম্মাদ খালেদ (মরণোত্তর), শওকত আলী খান (মরণোত্তর), চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজ সেবায় ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খাঁন।
এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচার (বিআইএনএ) স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয়।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম। এ সময় তিনি পদকে ভূষিত ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও তাদের অবদান বর্ণনা করেন।
পদক প্রাপ্ত সবাইকে ১৮ কেরেটের ৫০ গ্রাম সোনার মেডেল, ৩ লাখ টাকা ও একটি সনদ প্রদান করা হয়।