এলডিসি থেকে সদ্য উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনকারী দেশসমূহের উত্তরণকে টেকসই করতে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে আরও কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি ২১ মার্চ আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ারসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের চলমান দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক ২য় উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনের (বাপা+৪০) দ্বিতীয় দিনে এ আহ্বান জানান।
এইদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন প্লেনারি সেশনে সভাপতিত্ব করার পাশাপাশি তিনটি ইন্টারেক্টিভ প্যানেল আলোচনা ও একটি সাইড ইভেন্টসহ বেশ কয়েকটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন।
দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার আওতায় স্বল্পোন্নত দেশ, ভূ-বেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ, এবং ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দ্বীপরাষ্ট্র সমূহের টেকসই উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়া বিষয়ক সাইড ইভেন্টটির আয়োজন করে আর্জেন্টিনা, চীন, গিনি এবং জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত, ভূ-বেষ্টিত ও ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দ্বীপরাষ্ট্র সমূহের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের উচ্চ প্রতিনিধির কার্যালয় ও দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা কার্যালয়।
আয়োজিত এই সাইড ইভেন্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলডিসি থেকে সদ্য উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনকারী দেশসমূহের উত্তরণকে টেকসই করতে এবং এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে আরও কার্যকর করার আহ্বান জানান।
বাপা+৪০ এর প্রেরণাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আয়োজিত ইন্টারেক্টিভ প্যানেল তিনটি ছিল ১) দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার তুলনামূলক সুবিধা ও সুযোগ এবং অভিজ্ঞতা, সর্বোত্তম অনুশীলন ও সাফল্যগাঁথা বিনিময়, ২) দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ট্রায়াঙ্গুলার সহযোগিতার চ্যালেঞ্জসমূহ এবং এর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালীকরণ, ৩) দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ট্রায়াঙ্গুলার সহযোগিতার আওতায় এজেন্ডা ২০৩০ এর বাস্তবায়ন এগিয়ে নেওয়া। প্যানেল আলোচনাসমূহে প্রদত্ত বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার আওতাভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে বিদ্যমান সুবিধা ও সুযোগের পূর্ণ ব্যবহার করে কারিগরি সহযোগিতা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষির আধুনিকায়ন এবং ব্যবসা, বানিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে নিজ নিজ দেশের অর্জিত অভিজ্ঞতা ও সর্বোত্তম অনুশীলন পারস্পরিকভাবে বিনিময় করার আহ্বান জানান।
তিনি উপরিউক্ত বিষয়গুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত বাংলাদেশের সাফল্যগাঁথা তুলে ধরেন। দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাসমূহ ও দ্বিপাক্ষিক দাতা গোষ্ঠীর সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দক্ষিণের দেশগুলোর উন্নয়ন, অর্থ, অর্থনীতি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের একটি ফোরাম গঠন, এবং ঢাকায় ‘দক্ষিণ-দক্ষিণ জ্ঞান ও উদ্ভাবনী কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠাসহ এ জাতীয় পদক্ষেপের মাধ্যমে দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ট্রায়াঙ্গুলার সহযোগিতার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালীকরা এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যেতে পারে মর্মে তিনি উল্লেখ করেন।
দক্ষিণের দেশগুলোতে এজেন্ডা ২০৩০ এর বাস্তবায়ন এগিয়ে নিতে উন্নয়ন সহযোগিদের প্রতিশ্রুত আর্থিক সহযোগিতা প্রদান এবং উন্নত দেশগুলোর প্রযুক্তিগত জ্ঞান হস্তান্তরের পাশাপাশি দক্ষিণের আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের উপর জোর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।